চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে যাওয়া সেই ব্যক্তি বেঁচে আছেন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ মে ২০২৫, ১০:৫৮ AM , আপডেট: ২১ মে ২০২৫, ০৪:৩৮ PM

চলন্ত ট্রেনের দরজার বাইরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে একজনকে। তিনি প্রাণপণে চেষ্টা চালাচ্ছেন হাত ছাড়িয়ে নিতে। কিন্তু পেরে উঠছেন না। একপর্যায়ে পড়ে যান ট্রেনের নিচে। এ ঘটনার ৩৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে যে ওই ব্যক্তি ট্রেনের নিচে পড়ে নিহত হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার (১৮ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়া থেকে সান্তাহার অভিমুখী আদমদীঘি উপজেলার নসরতপুর স্টেশনে একটি কমিউটার ট্রেনে ঘটনাটি ঘটে। ওই ব্যক্তির নাম মতিউর রহমান (৪০)। তিনি পেশায় একজন দালাল। দূতাবাস ও এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কাজ করেন। তার বাড়ি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামে।
তবে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভাইরাল ভিডিওতে প্রদর্শিত চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া এই ব্যক্তি নিহত হননি। তিনি বেঁচে আছেন।
আরও পড়ুন : উপদেষ্টা মাহফুজ ও আসিফকে পদত্যাগের আহবান ইশরাকের
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Tarek Rahman’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৯ মে তারিখে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়৷ উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে ভিডিওটি ভিন্ন কোণ থেকে ধারণকৃত একই ঘটনার দৃশ্য৷
ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘আমরা কোনো কিছু না বুঝে সবকিছু শেয়ার দেই এটা ঠিক না সম্পর্কে উনি আমার ফুপা উনি একজন আদম বেপারী কিছু ঝামেলার কারণে কয়দিন ধরে সমস্যা ছিল আজকে তাকে পেয়ে ট্রেনের মধ্যে মারধর করা শুরু করে পরে তিনি জীবন রক্ষাতে ট্রেন থেকে পালানোর চেষ্টা করে কিন্তু তাকে জানে মারার চেষ্টা করে তার কাছে টাকা ছিল অনেক সেই টাকা তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় তারা। আর ফেসবুকে তাকে চোর বানানো হয়েছে হায়রে সমাজ বর্তমানে উনি বেঁচে আছেন কিন্তু এর পিছনে যাদের হাত আছে, তাদের কঠোরতম শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।’ এ ছাড়া কয়েকজন ব্যক্তির মন্তব্যের রিপ্লাইয়েও তিনি লিখে জানিয়েছেন যে ওই ব্যক্তি বেঁচে আছেন।
আরও পড়ুন : ইউজিসির সামনে ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অনশন শুরু
রিউমর স্ক্যানার জানায়, মতিউর রহমানের ছেলে আহসান হাবিব গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাবা গতকাল দুপুরে বগুড়া থেকে দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেনে সান্তাহারে আসছিলেন। আসার পথে নসরতপুর রেলস্টেশনে আসার আগে বাবার কামরায় থাকা ১০ থেকে ১২ যুবক বাবাকে মারধর করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে চলন্ত ট্রেনের দরজা দিয়ে তারা বাবাকে নিচে ফেলে দেন। ট্রেন থেকে রেললাইনে পড়ে গেলেও ভাগ্য বলে ট্রেনের চাকা তার শরীরের ওপর দিয়ে যায়নি। তবে আঘাত লেগে একটা পা ভেঙে গেছে।’
আহসান হাবিব জানান, তার বাবা মতিউর রহমানকে উদ্ধার করে প্রথমে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তিনি এখন বগুড়ায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন।
সংস্থাটি জানায়, বগুড়ায় সম্প্রতি চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে গিয়ে বেঁচে যাওয়া জীবিত ব্যক্তিকে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।