এপ্রিলে কমতে পারে করোনার প্রকোপ, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮০০

করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে মাস্কের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় দীর্ঘ লাইন
করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে মাস্কের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় দীর্ঘ লাইন  © রয়টার্স

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে পরিস্থিতি আরও সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

চীনের বাইরে ইতালি এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসটি। করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে বিদেশি মুসলিম তীর্থযাত্রীদের ভ্রমণ বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি আরব। এছাড়া করোনাভাইরাস ঠেকাতে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সরকার নতুন করে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। খবর: সিএনএন, রয়টার্স, বিবিসি।

গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সর্বশেষ সাত দিনে নতুন করে অন্তত ২০টি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কথা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। এ নিয়ে ৪০টির অধিক দেশে ৮২ হাজারের অধিক মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো একদিনে চীনের বাইরে সর্বোচ্চ-সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ভাইরাসের প্রকোপের কারণে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো পতন হয়েছে বৈশ্বিক পুুঁজিবাজারে। ফলে বাজার মূল্যমান হারিয়েছে তিন লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলার।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানে করোনাভাইরাস বেশ খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটির পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতিবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান মোজতাবা জোলনুর নিজেই আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে।

এর আগে ইরানের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীও এ রোগে আক্রান্ত হন। ইরানে এ পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। এছাড়া ইউরোপের অন্তত সাতটি দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। ইতালিতে এ পর্যন্ত ৪০০ জনকে আক্রান্ত পাওয়া গেছে। মাত্র একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ২৫ শতাংশ।

দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫০৫ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে একজনের। এ নিয়ে সর্বমোট এক হাজার ৭৬৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দেশটিতে, মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। এদিকে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা নেওয়া অনেকে ফের এ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে চীনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এ ধরনের আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ শতাংশ।

জাপানেও একই খবর আসায় বাড়ি ফিরে যাওয়াদের বিষয়েও হালনাগাদ তথ্য রাখছে দেশ দুটি। এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে জাপানের অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে সৌদি আরবে তীর্থযাত্রা (ওমরাহ) বন্ধ নিয়ে নতুন জটিলতা শুরু হয়েছে। আগামী জুলাই এবং আগস্ট হজের মৌসুম হওয়ায় কতদিন এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। ওমরাহ হজযাত্রীরা বছরের যে কোনো সময় দেশটিতে যেতে পারে।

তবে করোনার প্রভাবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত অবশ্যম্ভাবী ছিল বলে অনেকে মনে করছেন। দেশটিতে পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং ভারতের মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি ওমরা হজ পালন করেন।

অপরদিকে আগামী এপ্রিলের শেষ পর্যায়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে বলে চীনের একজন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে চায়না ন্যাশনাল ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক ঝোং নানশ্যান বলেছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।

তবে ধারণাকে ছাড়িয়ে গিয়ে এখন চীনে ৭৮ থেকে ৭৯ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন চীনের বাইরে ভাইরাস বেশি ছড়ানোয় নীতির পরিবর্তন আনা জরুরি বলে চীনা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ