মার্কিন শুল্কের ধাক্কা: ভারতের অনেক পোশাক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫২ AM , আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৭ AM
ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিকৃত পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকে। নতুন এ শুল্ক আরোপের ফলে গুজরাট, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বহু পোশাক কারখানায় ইতিমধ্যেই উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, টার্গেট, ওয়ালমার্ট, গ্যাপ ও জারার মতো বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের জন্য ভারত প্রতিবছর প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে। এর এক-তৃতীয়াংশই তৈরি হয় তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুরে। তবে হঠাৎ শুল্ক বৃদ্ধি শহরের ব্যবসায়ীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে।
তিরুপ্পুরের এক কারখানার মালিক এন কৃষ্ণমূর্তি বলেন, ‘সব ক্রেতাই অর্ডার বাতিল করেছেন। সেপ্টেম্বরের পর থেকে আর কিছু করার থাকবে না।’ ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনায় তিনি সম্প্রতি ২৫০ জন নতুন কর্মী নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু শুল্ক আরোপের পর পুরো পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে, নতুন কর্মীদের বসিয়ে রাখতে হচ্ছে।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস (এফআইইও) জানায়, অতিরিক্ত শুল্কের কারণে রপ্তানির খরচ এতটাই বেড়ে গেছে যে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে একের পর এক অর্ডার বাতিল হচ্ছে, উৎপাদন থমকে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্কুল খোলার দুই দিন পর বন্দুক হামলায় নিহত ২
সংগঠনের সভাপতি এস সি রালহান বলেন, ‘মার্কিন সরকার ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। ফলে মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। এতে ভারতীয় টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্প কার্যত বন্ধ হওয়ার পথে।
তিনি আরও জানান, নতুন শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্যের দাম ৩০–৩৫ শতাংশ বেড়ে গেছে। এতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষে চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা সম্ভব হচ্ছে না।
পোশাক ছাড়াও চামড়া, হস্তশিল্প, সিরামিক, কেমিক্যাল, কার্পেটসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর খাত একই সংকটে পড়েছে। সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে সামুদ্রিক খাবার রপ্তানিতে, যার প্রায় ৪০ শতাংশ যেত যুক্তরাষ্ট্রে। এখন শুল্ক বৃদ্ধির কারণে সেই বাজারও সঙ্কুচিত হচ্ছে।
এফআইইওর দাবি, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ভর্তুকি ও ঋণ সহায়তা জরুরি। তা না হলে বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়বে।
গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ৪০–৪৫ শতাংশ কমতে পারে। অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যেখানে রপ্তানি আয় হয়েছিল প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলার, এবার তা কমে ৫০ বিলিয়নের নিচে নামতে পারে।