ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীদের বিপক্ষে ভোট দিলেন টিউলিপ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০১:৩৪ PM , আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩২ AM
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’কে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। এই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে দেশটির পার্লামেন্টে ভোট দেন ৩৮৫ জন এমপি। এর মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি ও বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক। বিপক্ষে ভোট পড়ে মাত্র ২৬টি। গত বুধবার (২ জুলাই) এ ভোটাভুটি হয়।
এর ফলে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ এখন যুক্তরাজ্য ও এর আওতাভুক্ত অঞ্চলগুলোতে এমন আইনি ঝুঁকির মুখে পড়েছে, যা আল-কায়েদা ও আইএসের মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সংগঠনটির সদস্য হওয়া, তাকে সমর্থন করা কিংবা কোনোভাবে সহযোগিতা করাও এখন বেআইনি।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে সংগঠনটির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড। গত মাসে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’-এর কয়েকজন কর্মী ব্রিটেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে প্রবেশ করে দুটি সামরিক বিমানে লাল রঙ ছিটিয়ে প্রতিবাদ জানান। এই ঘটনার পর থেকেই সংগঠনটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
তবে এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্বতন্ত্র এমপি জারা সুলতানা বলেন, “একটি স্প্রে ক্যান আর আত্মঘাতী বোমার মধ্যে তুলনা টানা কেবল হাস্যকরই নয়, এটা নৈতিকভাবে ভয়াবহ। মতপ্রকাশ, প্রতিবাদ এবং সত্য বলাকে অপরাধ হিসেবে দেখাতেই এই সিদ্ধান্ত।”
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের যুক্তরাজ্য শাখার প্রধান নির্বাহী সাশা দেশমুখ বলেন, “এটি আইনের অতিরিক্ত ব্যবহারের নজিরবিহীন উদাহরণ। সরকার এর মাধ্যমে মতপ্রকাশ দমন, নজরদারি ও নির্বিচারে গ্রেপ্তারের মতো ক্ষমতা পাচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। যুক্তরাজ্যেও একাধিক সংগঠন প্রতিবাদ করছে, যার মধ্যে অন্যতম ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’। তবে সংগঠনটির কৌশল নিয়ে মতভেদ রয়েছে— কেউ এটিকে শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ বলছেন, আবার কেউ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ব্রিটিশ সরকারের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক পরিসরে বিভাজন আরও গভীর করবে এবং গাজা সংকট নিয়ে সরকারের অবস্থানকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে।