বাড়ির ডিপ ফ্রিজেই সন্তানের মৃতদেহ রাখলেন মালদহের মা-বাবা, কেন?

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

ময়নাতদন্ত শেষ হলেও সন্তানের মরদেহ সৎকারে রাজি নন মা-বাবা। বরং বাড়ির ডিপ ফ্রিজেই তিন দিন ধরে সংরক্ষণ করে রেখেছেন ছেলের নিথর দেহ। কারণ, পরিবারের দাবি—আবাসিক স্কুল কর্তৃপক্ষের অত্যাচারেই মৃত্যু হয়েছে তাদের ছেলের। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত দাফন নয়, সাফ জানিয়েছেন শোকাহত বাবা-মা। হাড় হিম করে দেওয়া এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মানিকচকে।

মৃত শিক্ষার্থীর নাম শ্রীকান্ত মণ্ডল (১৩)। মানিকচক ব্লকের ভূতনিচরের হীরানন্দপুর এলাকার কেদারটোলার বাসিন্দা সে। স্থানীয় একটি বেসরকারি আবাসিক স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। দিনকয়েক আগে ওই স্কুলের হোস্টেল থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়। যদিও পরিবার বলছে, এটা আত্মহত্যা নয়—এ মৃত্যু পরিকল্পিত। স্কুল কর্তৃপক্ষের নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছে শ্রীকান্ত।

ছেলের মৃত্যুর পর মানিকচক থানায় অভিযোগ করেছেন শ্রীকান্তের বাবা প্রেমকুমার মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘স্কুলের মালিক ও প্রধান শিক্ষক সাজির হোসেনই আমাদের ছেলেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন। অথচ তিন দিন পেরিয়ে গেলেও তাকে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ। সুবিচার না হলে ছেলের দেহের শেষকৃত্য করব না।’

পরিবারের অভিযোগ, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ওপর পুরোপুরি আস্থা নেই তাদের। যদি রিপোর্টে গাফিলতি থাকে, তাহলে আবার ময়নাতদন্তের প্রয়োজন হতে পারে। সেই কারণেই সন্তানের মরদেহ বরফে মুড়িয়ে ফ্রিজে রেখেছেন তারা।

ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা লক্ষ্মীরানি সরকার জানিয়েছেন, ঘটনার রাতে চিৎকার করায় শ্রীকান্তকে বকাঝকা করা হয়েছিল ঠিকই, তবে কোনো মারধর করা হয়নি।

হোস্টেলের যে ঘরে শ্রীকান্ত থাকত, সেখানে আরও প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকত। তিন বছর ধরে সেই স্কুলেই পড়াশোনা করছিল সে। ঘটনার পর থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে শনিবার (৫ জুলাই) রাত পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে তারা।

পরিবার বলছে, তদন্ত যত দিন চলবে, তাদের অপেক্ষাও তত দিন চলবে—সন্তানের মরদেহ ফ্রিজেই থাকবে, যতক্ষণ না সুবিচার নিশ্চিত হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ