খামেনিকে হত্যার চেষ্টা, ‘খুঁজেছি কিন্তু পাইনি’— ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১১:১৩ AM , আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫, ০৩:৩২ PM
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতে ইসরায়েল পরিকল্পনা করেছিল ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করার। কিন্তু বাস্তবে সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে একাধিক ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি প্রকাশ করেন।
চ্যানেল ১৩-কে দেওয়া এক বক্তব্যে কাৎজ জানান, ‘আমরা বহুবার চেষ্টা করেছি খামেনিকে খুঁজে বের করতে। যদি তিনি আমাদের টার্গেটের আওতায় আসতেন, আমরা তাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতাম। কিন্তু এমন কোনো ‘অপারেশনাল সুযোগ’ আমরা পাইনি।’ একই ধরনের মন্তব্য তিনি চ্যানেল ১২ এবং কান চ্যানেলেও করেন।
তিনি জানান, যুদ্ধের শুরুর সময়ই ইসরায়েল খামেনিকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল। তবে তিনি গা ঢাকা দিয়ে যান এবং সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। কাৎজ বলেন, ‘খামেনি নিজেই বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি টার্গেট হয়েছেন, তাই একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নেন। এরপর তাকে টার্গেট করা আর বাস্তবসম্মত ছিল না।’
এই হামলার পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অনুমোদন ছিল কি না—এই প্রশ্নে কাৎজ স্পষ্ট জানান, ‘এসব বিষয়ে আমরা কারো অনুমতির প্রয়োজন মনে করি না।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ১৭ জুন এক সামাজিকমাধ্যম পোস্টে খামেনিকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমরা জানি তিনি কোথায় লুকিয়ে আছেন এবং তাকে লক্ষ্য করা খুব সহজ। কিন্তু আপাতত তাকে হত্যা করছি না।’ তবে কিছুদিন পর ট্রাম্প জানান, তারা ‘রেজিম চেঞ্জ’ বা শাসন পরিবর্তনের পথে যাচ্ছেন না।
সাক্ষাৎকারে কাৎজ খামেনিকে ‘আধুনিক যুগের হিটলার’ হিসেবে আখ্যা দেন এবং বলেন, ‘এই নেতা আর বেঁচে থাকার যোগ্য নন।’ তবে ইসরায়েলের উদ্দেশ্য ছিল না ইরানের সরকার পতন ঘটানো; বরং দেশটির শাসন কাঠামোকে কাঁপিয়ে দেওয়া এবং চাপে ফেলা।
যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলের পক্ষ থেকে খামেনিকে হত্যা করার আর কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানান কাৎজ। তবে সতর্ক করে বলেন, ‘আমি তাকে নিশ্চিন্তভাবে বসে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি না। তিনি যেন হিজবুল্লাহর নিহত নেতা হাসান নাসরাল্লাহর গল্প থেকে শিক্ষা নেন।’
চ্যানেল ১২-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাৎজ দাবি করেন, ইসরায়েল ইরানের সম্পূর্ণ পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। যদিও সব ইউরেনিয়ামের সঠিক অবস্থান জানা নেই, তবুও ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন ইরান কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে মাত্র। আমি বলছি, তাদের পুরো সক্ষমতা ফিরে পেতে বহু বছর লাগবে। তবে আমরা তা কখনোই হতে দেব না।’
ইরানের বিরুদ্ধে ‘প্রয়োগযোগ্য নীতি’ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে কাৎজ বলেন, ‘যেভাবে আমরা লেবাননে হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগার ধ্বংস করেছি, ঠিক সেভাবেই—তবে ১০০ গুণ বেশি পরিসরে—ইরানেও অভিযান চালানো হবে।’
গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি এটিকে অবসন্নতামূলক যুদ্ধ হতে দিতে পারি না। হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ধ্বংস এবং অবশিষ্ট ৫০ জন জিম্মিকে ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য।’