ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের নজিরবিহীন হামলা ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’

নজিরবিহীন হামলা ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’
নজিরবিহীন হামলা ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’  © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামের একটি সুপরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। রোববার পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন এই অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

জেনারেল কেইন জানান, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টার এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমানের একটি বহর ইরানে প্রবেশ করে। আকাশপথে বিভ্রান্তিকর কৌশলের মাধ্যমে আক্রমণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। একটি অংশের বিমান পশ্চিমে যাত্রা করে শত্রুপক্ষকে বিভ্রান্ত করে, অপর অংশ পূর্বমুখী হয়ে গোপনে আক্রমণে অংশ নেয়।

অভিযানের শুরুতেই ইরানের ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনার ভূপৃষ্ঠের অবকাঠামোতে মার্কিন সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপ করা হয় দুই ডজনেরও বেশি টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। এরপর বি-২ স্টিলথ বিমানগুলো নাতাঞ্জ ও ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার দিকে অগ্রসর হয়।

বিমানগুলোকে নিরাপদ প্রবেশ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে উচ্চগতির প্রতিরোধ বিমান ও চতুর্থ ও পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান দিয়ে ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যস্ত রাখে। এরপর প্রধান বি-২ বিমান থেকে ফোরদো স্থাপনায় ফেলা হয় দুইটি ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা। পুরো অভিযানে মোট ১৬টি জেবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বোমা ব্যবহার করা হয়।

মার্কিন পূর্বাঞ্চলীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪০ থেকে ৭টা ৫ মিনিট এবং ইরানি সময় রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে মূল হামলাটি হয়। অভিযানে নির্ধারিত সকল লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে এবং কোনো মার্কিন বিমান শত্রুপক্ষের আক্রমণের শিকার হয়নি বলে দাবি করেন জেনারেল কেইন।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটার হেগসেথ বলেন, এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করা, সরকার পরিবর্তন নয়। তিনি বলেন, “এই অভিযান ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছে, তবে কোনও সামরিক বা বেসামরিক প্রাণহানি ঘটেনি।”

ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে হেগসেথ বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে ছিলেন। তবে ইরানের অজুহাত এবং নিরাপত্তা হুমকি বিবেচনায় তিনি সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।”

প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও জানান, বিশ্বের আর কোনও দেশ এমন এককভাবে জটিল ও সুনির্দিষ্ট সামরিক অভিযান চালাতে সক্ষম নয়। তিনি একে “সাহসী ও দুর্দান্ত” আখ্যা দেন এবং বলেন, “যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, তখন বিশ্বের তা শোনা উচিত।”

হামলার পর আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা ইরানে সরকার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে এই অভিযান চালায়নি। বরং দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তায় তৈরি হওয়া হুমকি ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং কৌশলগত পরিকল্পনার নিখুঁত প্রয়োগের পরিচয় পাওয়া গেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: সিএনএন, আল জাজিরা


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence