তিন মাসের মধ্যেই শিক্ষক পদে নতুন নিয়োগ: মমতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  © ফাইল ফটো

পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্লেখ করে বলেছেন, ওরা বলেছে তিন মাসের মধ্যে প্রসেস করতে, আমরা তা করে দেবো। শিক্ষামন্ত্রীকে ইতোমধ্যে বলেছি, স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (এসএসসি) আমাদের ভাবনা জানাতে। এসএসসি স্বশাসিত সংস্থা। ওরা যেমন ভালো বুঝবে, নিজেদের মতো করে করবে। তবে আমরা চাই এটা তাড়াতাড়ি হয়ে যাক।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকের পরে নবান্নে ফের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আদালতের রায় যেমন আমাদের বিরুদ্ধে গিয়েছে, তেমনই রায় আমাদের দুটো পথও দিয়েছে। রায় মেনেই আমরা সেটা করবো। একইসঙ্গে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে কারা কারা মন্ত্রী ছিলেন, আমরা রেকর্ড খুঁজে বার করবো। কোনো একটা জেলার কথা তো আমরা জানিই।

এর আগে ব্যাপক দুর্নীতি ও জালিয়াতির জন্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। একবছর আগে কলকাতা হাইকোর্ট এই ২৬ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল হয়। এবার সেই রায় বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে তার মধ্যে কয়েকটি নতুন বিষয়ও যোগ করা হয়েছে।

এদিকে বৈঠকে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, যখন বিপদে মানুষের পাশ থেকে সবাই পালিয়ে যায়, তখন কেউ না কেউ আসে তাকে রক্ষা করার জন্য।

তিনি বলেন, যাদের বাতিল করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১১ হাজার ৬১০ জন নবম-দশম শ্রেণিতে পড়াতেন। ৫ হাজার ৫৯৬ জন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াতেন। বাকিরা অন্য ক্লাসে। আপনারা জানেন, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

এটি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার গেটওয়ে। তাদের মধ্যে অনেকে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখছেন। যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া হয়, ২৬ হাজারের চাকরি বাদ দিয়ে দেয়া হয়, তা হলে স্কুল পড়াবে কে!

মমতা বলেন, এতোগুলো মানুষের চাকরি যাওয়ার পরে বিজেপির মন্ত্রী সুকান্তবাবু বলছেন। আমি ফেসবুকে তার উক্তি দেখেছি। অযোগ্যদের জন্য যোগ্যদের চাকরি গিয়েছে, এর জন্য নাকি আমরা দায়ী। আপনারা যখন প্রথমে কেস করলেন, একবারও ভাবলেন না কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য? সরকারকেও ভাবতে দিলেন না।

মমতা বলেন, এই মামলায় তো তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে জেলে রেখে দেয়া হয়েছে, অনেক দিন হয়ে গেল! এক জনের অপরাধে কত জনের শাস্তি হয়?

মমতা আরো বলেন, আত্মরক্ষার জন্যেও তো সুযোগ দেয়া উচিত। এতগুলো শিক্ষকের ভবিষ্যৎ! ভুলে যাবেন না, এরা সবাই স্কুলের শিক্ষক। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধসিয়ে দেয়া কি বিজেপির টার্গেট? মুখ্যমন্ত্রী রায়ের বিষয়ে জানান, যারা ইতিমধ্যে চাকরি পেয়েছেন, তাদের টাকা দিতে হবে না।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ সুপ্রিম কোর্টের রায় আমরা বিস্তারিত পড়েছি। রায়টি আমরা পুরোটা পড়েছি। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান রয়েছে। কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, এই ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলায় অন্যতম একটি জটিলতা ছিলো যোগ্য এবং অযোগ্যদের বাছাই করা। ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে, যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব হয়নি। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি পেয়ে যারা চাকরি করছিলেন, তারা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ্যতা পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, যারা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসির মাধ্যমে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তারা চাইলে পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন।

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে গোটা নিয়োগ প্যানেলই বাতিল হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের রায়ই বহাল রেখেছে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের রায়ে চাকরি বাতিল হচ্ছে রাজ্যের প্রায় ২৫ হাজার ৭৫২ শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর। তিন মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence