ইজতেমা থেকে ফেরার পথে ভারতে হেনস্থার শিকার মুসলিম ছাত্র
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২৪ PM , আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৬ AM

টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিয়ে ফেরার পথে নিজ দেশ ভারতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন এক মুসলমান ছাত্র। বুধবার (৫ ফেব্রয়ারি) ওই ঘটনা জানিয়ে কলকাতায় পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার বাসিন্দা, এম টেক-এর ছাত্র রেজাউল ইসলাম বলেছেন যে দর্শনায় সীমান্ত পেরিয়ে তিনি আরও তিন বন্ধুর সঙ্গে নদীয়ার গেদে থেকে ট্রেন ধরেন। তাদের গন্তব্য ছিল কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন। যাত্রাপথেই কিছু যাত্রী রেজাউল ইসলামের ধর্ম নিয়ে এবং বাংলাদেশি বলে কটূক্তি করেন। তাকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয় বলেও পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন রেজাউল ইসলাম। তার অভিযোগ নদীয়ার রাণাঘাট স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠা একদল যাত্রী প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তার ওপরে এই হেনস্থা চালান।
শিয়ালদহ রেল পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরে কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্র বলেন, ‘ইজতেমায় গিয়েছিলাম আমরা চার বন্ধু। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে গেদে স্টেশন থেকে আমরা ট্রেনে চাপি। ফাঁকা ট্রেন ছিল, তবে রাণাঘাট স্টেশনে খুব ভিড় হয়ে যায়।
‘আমার একটা ট্রলি ব্যাগ সিটের ওপরে বাঙ্কে রেখেছিলাম। সেটা নামিয়ে সিটের নিচে রাখতে বলেন এক যাত্রী। আমি ব্যাগটা নামানোর সময়ে অন্য এক যাত্রী আমাকে ধাক্কা দেন। তারপরেই কটূক্তি করতে থাকেন তিনি। আমি তাকে বলি যে এরকমভাবে কথা বলছেন কেন?’ ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলছিলেন রেজাউল।
তিনি বলেন, ‘এরপরেই ওই ব্যক্তির কয়েকজন সহযাত্রী আমার ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করতে থাকে। তারা বলেন যে আমি নাকি বাংলাদেশি, আমাদের মতো মানুষই নাকি কলকাতা দখল করে ফেলছে। আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া উচিত ইত্যাদি। আমি তাদের স্পষ্টভাবে বলি যে আমিও ভারতীয়, আপনিও ভারতীয়। দুজনের একই অধিকার রয়েছে এদেশে থাকার। এভাবে কথা বলতে পারেন না আমার সঙ্গে।’
এই ‘অধিকার’ ইত্যাদি প্রসঙ্গ তোলার পরেই শুরু হয় শারীরিক নিগ্রহ।
‘একজন আমার টুপি মাটিতে ফেলে দেয়, আমার চুল, দাড়ি ছিঁড়ে দিয়েছে। কয়েকজন আমাকে তো চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। তবে ওই যে ভদ্রলোক প্রথমে আমাকে ট্রলি ব্যাগ নামাতে বলেছিলেন, তিনি আমাকে আগলিয়ে রেখেছিলেন’ জানিয়েছেন রেজাউল ইসলাম।
ঘটনার সময় রেজাউল ইসলামের অন্য বন্ধুরা একই কামরার অন্যান্য দিকে বসেছিল, তারাও জানতে পারেনি যে ঠিক কী ঘটছে তার সঙ্গে।
হুগলী জেলার বাড়ি ফিরে তিনি স্থানীয় থানায় গিয়েছিলেন। তবে ঘটনা যেহেতু অন্য জেলার, তাই সেখানে অভিযোগ দায়ের করা যায়নি। এদিকে শারীরিক হেনস্থার ফলে তাকে ডাক্তারের কাছেও যেতে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রেজাউল ইসলাম।
বুধবার দুপুরে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে রেজাউল ইসলাম শিয়ালদহ রেল পুলিশ থানায় এসেছিলেন। প্রায় দেড় পাতা জুড়ে বিস্তারিত বিবরণ লিখে জানিয়েছেন পুলিশের কাছে। সেখানে তিনি এই অনুরোধ করেছেন, ‘দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা যাতে করে সকল ধর্মের মানুষ ট্রেনে নিরাপদভাবে চলাচল করতে পারবে।’
রেজাউল ইসলামের অভিযোগটি এফআইআর হিসাবে গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছে শিয়ালদহ গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ বা জিআরপি। পুলিশের সূত্রগুলি বলছে তারা বুধবার সকালেই সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন আর তদন্তও শুরু করে দিয়েছেন। এখন লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে তদন্ত আরও জোরালো হবে।
শিয়ালদহ রেল পুলিশের সুপার জে মার্সি বলছেন, তারা অভিযোগটি পেয়েছেন। ইতোমধ্যে তদন্তও শুরু করেছেন তারা। হুগলী জেলার বাড়ি ফিরে তিনি স্থানীয় থানায় গিয়েছিলেন। তবে ঘটনা যেহেতু অন্য জেলার, তাই সেখানে অভিযোগ দায়ের করা যায়নি।
এদিকে শারীরিক হেনস্থার ফলে তাকে ডাক্তারের কাছেও যেতে হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রেজাউল ইসলাম। বুধবার দুপুরে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে রেজাউল ইসলাম শিয়ালদহ রেল পুলিশ থানায় এসেছিলেন।
প্রায় দেড় পাতা জুড়ে বিস্তারিত বিবরণ লিখে জানিয়েছেন পুলিশের কাছে। সেখানে তিনি এই অনুরোধ করেছেন, "দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা যাতে করে সকল ধর্মের মানুষ ট্রেনে নিরাপদভাবে চলাচল করতে পারবে।"
রেজাউল ইসলামের অভিযোগটি এফআইআর হিসাবে গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়েছে শিয়ালদহ গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ বা জিআরপি। পুলিশের সূত্রগুলি বলছে তারা বুধবার সকালেই সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন আর তদন্তও শুরু করে দিয়েছেন। এখন লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে তদন্ত আরও জোরালো হবে।
শিয়ালদহ রেল পুলিশের সুপার জে মার্সি বলছেন, তারা অভিযোগটি পেয়েছেন। ইতোমধ্যে তদন্তও শুরু করেছেন তারা। [সূত্র: বিবিসি বাংলা]