অসুস্থতার কারণ দেখালেও বসতে দেয়নি পরীক্ষায়, ঝুলন্ত লাশ মিলল স্কুলছাত্রের

অসুস্থতার প্রমাণ দেখালেও ভারতে এক স্কুলছাত্রকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি
অসুস্থতার প্রমাণ দেখালেও ভারতে এক স্কুলছাত্রকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি  © হিন্দুস্তান টাইমস

অসুস্থতার কারণে কয়েক সপ্তাহ স্কুলে যেতে পারেনি ছাত্র। আর অনুপস্থিত থাকার কারণ দেখিয়ে তাকে পরীক্ষায় বসতে দেননি প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ, চিকিৎসকের নথিপত্র দেখানোর পরেও তিনি পরীক্ষায় বসতে দেননি। এমনকী ছাত্রকে মারধর করেন প্রধান শিক্ষক। সে ঘটনার পর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রের। 

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে। এ ঘটনায় শক্তিগড়ের সফদর হাশমি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ঘোষকেই দায়ী করেছে ছাত্রের পরিবার। নিহত ছাত্রের নাম ওসমান গনি চৌধুরী। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে স্কুলের সামনে লাশ রেখে বিক্ষোভ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় হাত ভেঙে গিয়েছিল ওসমানের। সে কারণে ১৫ দিন স্কুলে যেতে পারেনি। সেরে ওঠার পর গত সোমবার স্কুলে যায় সে। এদিন থেকে দশমের ইউনিট টেস্ট শুরু হয়েছিল। ছাত্রটি সঙ্গে যাবতীয় নথিপত্র নিয়ে গিয়েছিল। প্রধান শিক্ষককে চিকিৎসার যাবতীয় কাগজ দেখিয়েছিল ছাত্রটি। 

প্রধান শিক্ষক এরপরও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পরীক্ষায় বসা যাবে না। এ নিয়ে ছাত্রর সঙ্গে তার বচসা বাঁধে। তখন ওসমানকে জুনিয়রদের সামনে মারধর করেন বলে অভিযোগ। শেষে পরীক্ষা না দিয়েই বাড়ি ফিরে যায় সে। দুপুরে বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়। 

পরিবারের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের অমানবিকতায় তাদের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ওসমানের বাবা পরিযায়ী শ্রমিক। তিনি হায়দরাবাদের কারখানায় কাজ করেন। ঘটনার খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। তার অভিযোগ প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতি মিলে তাদের সন্তানকে মারধর করেছে। সেই কারণে অপমানে ও লজ্জায় আত্মঘাতী হয়েছে সে।

আরো পড়ুন: ঈদ উপলক্ষে বদলে গেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন

এদিকে লাশ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পর গা টাকা দেন প্রধান শিক্ষক। অন্য শিক্ষকরাও স্কুলে যাননি। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে প্রধান শিক্ষক এবং অন্যদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। পরিবারের অভিযোগ, এ ঘটনার সঙ্গে তিনজন জড়িত।

প্রতিবেশীদের ভাষ্য, একজন ছাত্র পরীক্ষা দিতে চাইলেও তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। এটা উচিত হয়নি। যদিও স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি শেখ কামাল হাসানের দাবি, তিনি এর সঙ্গে জড়িত নন। কিছু জানেন না, ঘটনাস্থলেও ছিলেন না। 

ছাত্রের বাবার ভাষ্য, দোষীরা ছাড় পাবে না। অন্যদিকে, এ ঘটনায় জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। খবর: হিন্দুস্তান টাইমস।


সর্বশেষ সংবাদ