বাংলায় পড়া মানেই ইংরেজি বা অন্য ভাষাকে কম গুরুত্বপূর্ণ ভাবা নয়
- অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
- প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫১ AM , আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৫ AM

বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক অধ্যাপক আজম একটা কাজ নিজ উদ্যোগে নিজের মাথায় নিয়েছে। আর সেটি হলো বাংলা ভাষায় পাঠ্য পুস্তক লেখানোর কাজ। এজন্য বেশ কিছুদিন আগে সাম্ভাব্য লেখকদের নিয়ে একটি মিটিং এর আয়োজন করেছিলেন। আমার অনেক সহকর্মীসহ আমি নিজেও সেখানে আমন্ত্রিত ছিলাম।
মাত্র কয়েকদিন আগেও হঠাৎ দেখি অধ্যাপক আজম আমাকে হোয়াটসআপে কল দিয়েছে। ধরা মাত্রই বই লেখার অগ্রগতি বা তাগাদা কল। আসলে এই ফোন কলের কয়েকদিন আগেই আমি লেখা শুরু করেছিলাম। তবে এই তাগাদার পর গতি একটু বেড়েছে। আশা করি, আগামী ২১-শে বইমেলায় পদার্থবিজ্ঞানের কোন একটি বিশেষ বিষয়ে বাংলায় আমার একটি বই বের হবে।
আমি অনেকদিন ধরে লিখে আসছি যে, পৃথিবীতে এমন একটি দেশের উদাহরণ নেই, যেই দেশ ভিন ভাষায় পড়ে উন্নত জাতি হতে পেরেছে। আমি আসলে সত্যেন বোস এবং আমার সরাসরি প্রিয় স্যার, হারুন স্যারের কথায় অনুপ্রাণিত। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমাদের শিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত বাংলায়।
বাংলায় পড়া মানেই ইংরেজি বা অন্য ভাষাকে কম গুরুত্বপূর্ণ ভাবা মোটেও নয়। কিন্তু মাতৃভাষা হবে প্রধান ভাষা এবং একই সাথে আরো এক বা একাধিক ভাষা শেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরকম উদ্যোগ এর আগে বাংলা একাডেমী কখনো নিয়েছে? শুধু কবিতা আর গল্পের বই নিয়েই পড়েছিল। অথচ দরকার ছিল স্কুল থেকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল শ্রেণীর বাংলায় বই লেখার উদ্যোগ নেওয়া।
আরো পড়ুন: ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: ছবি-সেলফি আপলোড আজকের মধ্যে
এটা অনেক আগেই শুরু করা উচিত ছিল। কিন্তু শুরুতে করিইনি। উল্টো আমরা উল্টো পথে হেঁটেছি। আমরা বাংলা মাধ্যমের চেয়ে ইংরেজি মাধ্যমে গুরুত্ব বেশি দিয়েছি। ইংরেজি বলতে পারাকে জ্ঞানের সাথে সম্পর্ক তৈরী করেছি। এই পথে হাঁটার কারণে ব্রেইন ড্রেইন বেড়েছে।
আশা করি, আমরা এখন সঠিক পথে আবার ফিরে আসব। এখানে লিখলাম এই জন্য যে আরও অনেক অনেক মানুষ এই উদ্যোগে যুক্ত হতে যেন উৎসাহ অনুভব করে। আসুন আমরা সবাই মিলে এই ক্ষেত্রেও একটা বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলি।
লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
(ফেসবুক থেকে নেওয়া)