শিক্ষক দিবস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

শিক্ষক দিবস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা
শিক্ষক দিবস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা  © সংগৃহীত

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আর জাতির সেই মেরুদণ্ড গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন একজন আদর্শ শিক্ষক। শিক্ষক একজন শিক্ষার্থীকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।

আজ ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস। জাতি গঠনে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৪ সাল থেকে প্রতিবছর এ দিনটিকে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। পৃথিবীর সব দেশের শিক্ষকসমাজের কাছে এই দিনটি অত্যন্ত সম্মান ও গৌরবের। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন ডেইলি ক্যাম্পাসের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রেদোয়ান রাকিব। 

ল' অ্যন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সাব্বীর আহমেদ বলেন, শিক্ষক একটি দেশ ও জাতির মেরুদন্ড। বাবা-মার পরে একটি মানুষের জীবনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানুষ তার শিক্ষক। একটি শিশুকে শিশু থেকে আদর্শ মানুষে পরিণত করতে শিক্ষকের অবদান সবচেয়ে বেশি। আর সেই আদর্শ ও মনুষ্যত্ববোধ সম্পন্ন মানুষ দেশ গঠনের ও পরিচালনার মূল কারিগর। একজন মানুষকে অজ্ঞতার আধার থেকে জ্ঞানের আলোর পথে নিয়ে আসেন তার শিক্ষক। তাই আমাদের প্রতিটি শিক্ষার্থীর উচিত শিক্ষককে তার প্রাপ্য সম্মান এবং মর্যাদা দেয়া। তার প্রতি আন্তরিক ও ভালোবাসা সম্পন্ন এক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। আর এই শিক্ষক শিক্ষার্থীর স্নেহময় আন্তরিক সম্পর্কের ভিত্তিতেই গড়ে উঠবে একটি সৎ, যোগ্য, দক্ষ,নির্ভীক ও দেশপ্রেমিক আদর্শ মানুষ। আর সেই সকল মানুষদের নিয়ে এই পৃথিবীর বুকে একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে আমরা নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো। আর এভাবেই শিক্ষক দিবসের আসল উদ্দেশ্য ও প্রত্যাশা পূরণ হবে বলে আমি মনে করি।

আল ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের আশরাফুল আলম বলেন, শিক্ষক হচ্ছেন একটি সমাজের মোমবাতি। মোমবাতি যেমন তার আলো দিয়ে চতুর্দিক আলোকিত করে, তেমনি শিক্ষকরাও তার শিক্ষার আলো ছড়িয়ে সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রকে আলোকিত করে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে থাকা কুসংস্কার, অন্ধকার দূর করে আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে যারা কার্যকরী ভূমিকা পালন করেন তারাই শিক্ষক। ছাত্রদের মনের সুপ্ত প্রতিভা জাগিয়ে তোলেন শিক্ষকগণ।  শিক্ষাদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জীবনের অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর নিরন্তন প্রচেষ্টা করেন।  কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের দেশের শিক্ষক সমাজ সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অবহেলিত। শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন না করা হলে মেধাবী তরুণরা এ পেশার প্রতি আগ্রহ হারাবে। সরকারের উচিত এ বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করা।পরিশেষে,শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষাগুরুকে জানাই অকৃত্রিম ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।

আল ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের সিদরাতুল মুনতাহা বলেন, শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক সকল জাতি।আর এ জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক ভাবে গড়ে তোলার গুরু দায়িত্ব শিক্ষকদের হাতেই। যদিও বিশ্ব পরিস্থিতি মোকাবিলায় দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষকের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। শিক্ষক হলো এমন একটা মাধ্যম যার মাধ্যমে সবার জন্য সমান ও মানসম্মত শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব হয়। বাংলাদেশের শিক্ষকরা নানা সমস্যায় সম্পৃক্ত থাকা সত্ত্বেও তাঁরা শিক্ষা বিতরণের মতো মহান কাজ থেকে পিছপা হননি । প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষকেদের এমন এমন নানামুখী সমস্যা বিদ্যমান। আমাদের দেশে শিক্ষদের যে বেতন কাঠামো নির্ধারিত আছে, তা খুবই হতাশাজনক। তাই শিক্ষকদের স্তর অনুযায়ী বেতন কাঠামো নির্ধারণ হওয়া উচিত।

ট্যুরিজম অ্যান্ট হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমরা আমাদের ছাত্র জীবনের বেশিরভাগ সময় ক্লাসরুমে স্যারদের সংস্পর্শে কাটিয়ে দেই। আমাদের ব্যবহারিক, আচরণগত এবং শিক্ষাগত পরিবর্তনের বেশিরভাগই আসে শিক্ষকদের কাছ থেকে। তাই প্রত্যেক শিক্ষকের মাঝে নীতি ও নৈতিকতা থাকা উচিত কারণ তারাই দেশ গঠন ও জাতি গঠন করে থাকেন। আমার জীবনে কোন কিছু করতে গেলে আমি অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকতাম। কলেজে একদিন ক্লাসে বায়োলজি স্যার বলেছিল, যে কাজই করবা না কেন সে কাজটাই মন দিয়ে করব হোক সেটা পড়াশোনা হোক বা সেটা টাইম নষ্ট করা বা সেটা প্রেম। তারপর থেকে কোন কাজ করে যদি দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকছি তখনই স্যারের বলা কথাটা মনে করি আর নিজেকে শান্ত করি। তাই আমি মনে করি আমাদেরকে সুস্থ সুন্দর জাতি উপহার দেওয়ার শক্তি কেবলমাত্র শিক্ষকেরাই রাখেন। 

আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস। শিক্ষকেরা পিতার মতো, যুগে যুগে বিশ্বমানবতার অগ্রযাত্রায় তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। শিক্ষক-ছাত্রের সম্পর্কটি পিতা-পুত্রের সম্পর্কের মতোই গভীর ও শাশ্বত। একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হিসেবে আমাদের ৪-৫  বছরের মতো সময় শিক্ষকদের সঙ্গে কাটাতে হয়, যার ফলে তাঁদের সঙ্গে গড়ে ওঠে এক মধুর সম্পর্ক।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আহমদ আব্দুল্লাহ বলেন,  যেসব শিক্ষক স্বজনপ্রীতি এবং নোংরা রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আন্তরিকতার সাথে সকল ছাত্রদের শিক্ষাদান করেন, তাঁরা সত্যিই আমাদের জন্য মডেল। এত সম্মানজনক পেশায় থাকার পরেও শিক্ষকগণ আজ অবহেলিত। যদি তাঁদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হয়, তবে তাঁরা শিক্ষায় উন্নত বাংলাদেশ গঠনের কারিগর হয়ে উঠবেন। এই বিশেষ দিনে আমাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এটি একটি সুযোগ। আসুন, আমরা সকলেই তাঁদের অবদানকে স্বীকৃতি দিই এবং তাঁদের উন্নতির জন্য কাজ করি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence