যে তরুণ ভোটারদের মূল্যবান ভোট পড়বে না ব্যালট বাক্সে

  © টিডিসি ফটো

৫ বছর পর আবার এল জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। শেষ সময়ের প্রচার প্রচারণা চলছে বেশ জোড়ালোভাবে। প্রতিটি নির্বাচনেই প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করে থাকেন। নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে তাদের প্রত্যাশা থাকে উন্নয়ন, নিজের এবং পরিবারের  নিরাপত্তা থেকে শুরু করে দেশের অগ্রগতি।

তবে নির্বাচনী এলাকায় ভোটের আমেজ ও উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেলেও, পড়াশোনাসহ বিভিন্ন কারণে নির্বাচনী এলাকার বাইরে থাকায় অনেক শিক্ষার্থী তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না। প্রতিটি নির্বাচনেই দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, এই শিক্ষার্থীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হন। ভোট দিতে না পারার এসব কারণ, অনুভূতি ও পরামর্শ নিয়ে তরুণ ভোটারদের সাথে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তৌফিকুল ইসলাম আশিক।

ফেনী-০১ আসনের ভোটার ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসফাক হোসাইন ইলহাম তার ভোট না দেয়ার ব্যাপারে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করে বলেন, ‘প্রথমত, প্রধান বিরোধীদলের অংশগ্রহণকে অর্ধ-প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাধাগ্রস্থ করা হয়েছে। বিরোধীদলগুলোর কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে মামলা-গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে হয়রানি করা, বিরোধিদলগুলোর সাথে মধ্যবর্তী সংলাপে না বসা নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধাগ্রস্ত করেছে। দ্বিতীয়ত, একদলীয় নির্বাচনের প্রতি অনাগ্রহ। যেখানে কোনো শক্ত প্রতিপক্ষ থাকবে না, দেশের কয়েকটি প্রধানতম রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ থাকবে না, স্বভাবতই সেখানে ভোট দেয়ার আগ্রহ আসবে না আমাদের। ব্যাপারটা যেন ফাঁকা গোলবারে গোল দেয়ার মতো আগ্রহহীণ ও নিরর্থক। 

আরও পড়ুন: এবার তরুণ ভোটার ১ কোটি ৫৪ লাখ

তিনি আরও বলেন, তৃতীয়ত, বিগত জাতীয় নির্বাচনসহ প্রতিটি আঞ্চলিক-স্থানীয় নির্বাচনগুলোকে একমুখী ও একদলীয় নির্বাচনে রূপদান করায় আমি কোথাও এখন পর্যন্ত ভোট দিতে পারিনি। পৌরসভা, উপজেলা পরিষদসহ কোথাও ভোট দিতে পারিনি। আমার পরিবার বিগত ১০ বছর কোথাও ভোট দেয়নি অনাগ্রহ ও ভয় থেকে। স্বভাবতই, এই নির্বাচনেও ভোট দেয়ার বিন্দুমাত্র আগ্রহবোধ আমিসহ অনেক সচেতন তরূণ ভোটারের মাঝে নেই।

লালমনিরহাট-২ আসনের ভোটার, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে এবারই প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল। চট্টগ্রাম থেকে লালমনিরহাট দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ভোট দিতে যাওয়া কষ্টসাধ্য। সামনে পরীক্ষা আছে, সেটার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। নির্বাচনের পরে দেশের অবস্থা কেমন হবে, গাড়ি চলাচল করবে কি না এসব বিভিন্ন কারণে ভোট দিতে যাওয়া হচ্ছে না। প্রথম সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে না পারার আফসোস থাকবে। তবে অবশ্যই চাই বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রার্থী নির্বাচিত হোক যে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।’

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের ভোটার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেছেন, ‘ভোটার হওয়ার পরে এটাই আমার প্রথম প্রথম ভোট। ভোট দেওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের পরে আমার ইনকোর্স এক্সাম এবং টিউশন থাকার কারণে ভোট দিতে যেতে পারছি না।’

নওগাঁ-৬ আসনের ভোটার, মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আতিকা আফিয়া বলেন, জাতীয় নির্বাচনে এবার প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ভোট দিতে পারবো না। এটা বললে ভুল হবে যে ঢাকা থেকে ন‌ওগাঁ অনেক দূরে বা যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ। তবে আমার সময় সুযোগ হয়ে উঠলো না। একাডেমিক চাপের মধ্যে যাওয়া আসার সময় পেলাম না। যদিও প্রথম ভোট দিতে যাওয়ার আনন্দ এগুলোর কাছে তেমন কিছুই না। কিন্তু শুধু ভোটের দিন ছুটি পাওয়ায় ঢাকা থেকে গিয়ে ভোট দিয়ে আসার মতো সময় থাকছে না। তাই প্রথম ভোট বা তার উদযাপন করা হলো না এবার‌।

নেত্রকোণা-১ আসনের ভোটার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান উদ্দীন বলেন, জাতীয় নির্বাচন এবার প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ভোট দিতে পারবো না। কেননা, ঢাকা থেকে সুসং দুর্গাপুর দীর্ঘ পথ। তাছাড়া টিউশন রয়েছে এবং পরীক্ষাও সন্নিকটে। যারা নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে ভোট দিতে পারবে না, তাদের জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণের পদ্ধতি থাকলে ভোট দেওয়া যেতো। আশা করি সরকার এই দিকগুলো পরবর্তীতে বিবেচনা করবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence