এমসি কলেজ থেকে অর্থমন্ত্রী মুহিত’র অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২২, ০৯:২৩ AM , আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৫৩ AM
দেশের অন্যতম সফল অর্থমন্ত্রী ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। জাতীয় সংসদে টানা ১০ বারসহ মোট ১২ বার বাজেট উপস্থাপন করেছেন। সাবেক এ অর্থমন্ত্রী শুক্রবার দিবাগত রাতে ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সিলেটের এমসি কলেজ থেকে আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি হন তিনি। ঢাবি থেকে ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম শ্রেণীতে কৃতকার্য ও একই বিষয়ে ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন তিনি।
এরপর ১৯৫৭-১৯৫৮ সালে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন সাবেক এ মন্ত্রী। এছাড়াও ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স অব পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন এ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৬০-১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মুহিত।
আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটের ধোপাদীঘির পাড়ে জন্মগ্রহণ করেন। মুহিতের দাদা খান বাহাদুর আবদুর রহিম ব্রিটিশ ভারতে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, বাবা আবু আহমদ আবদুল হাফিজ ছিলেন আইনজীবী ও মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ছিলেন গৃহিণী।
সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিতের বড়ভাই প্রয়াত জনাব এএমএ মসিহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর, ছোটভাই একে আবদুল মুবিন সাবেক সচিব ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি, অনুজ এএমএ মুইজ বিমাবিদ, ফুয়াদ প্রবাসী ব্যাংকার, ছোটবোন ডা. শাহলা খাতুন জাতীয় অধ্যাপিকা, ছোটবোন শিপা হাফিজা ও রিও আজিজা সমাজকর্মী, ছোটভাই ড. একে আবদুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাবেক মন্ত্রী মুহিতের এক মেয়ে ও দুই ছেলে। বড় মেয়ে সামিয়া মুহিত আন্তর্জাতিক ব্যাংকার, বড় ছেলে শাহেদ মুহিত স্থপতি এবং ছোট ছেলে বিদেশে শিক্ষকতায় নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া মুহিতের সহধর্মিণী সৈয়দা সাবিহা মুহিত একজন ডিজাইনার।
মুহিত ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এরপর ১৯৫৬ সালে লাহোরস্থ সিভিল সার্ভিস একাডেমী হতে প্রশিক্ষণ নেন। এরপর কর্মজীবনে প্রবেশ করেন তিনি। মহকুমা হাকিম (এসডিও) হিসেবে মুহিতের প্রথম কর্মস্থল ছিল মুলতান। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
১৯৬৯ সালে মুহিত যুক্তরাষ্ট্রস্থ পাকিস্তান দূতাবাসের ইকনমিক কাউন্সিলর হিসেবে যোগ দেন। এ সময় ১৯৬৯ সনের গণ অভ্যুত্থান। ১৯৭০-এর নির্বাচন ও পাকিস্তানিদের বৈরিতা তাকে ব্যথিত করে তোলে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনিই প্রথম পাকিস্তানি কূটনৈতিক যিনি বাংলাদেশের পক্ষে পাকিস্তানের কূটনৈতিক দায়িত্ব ত্যাগ করেছিলেন।
দেশ স্বাধীন হলে তিনি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা সচিব, ১৯৭৭ সালে তাকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিবের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি ১৯৮১ সালে সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তিনি বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, আইডিবি ও জাতিসংঘ সংস্থাসমূহে কার্যক্রম শুরু করেন। এছাড়া ফোর্ড ফাউন্ডেশন ও ইফাদ এ কাজ করে নন্দিত হন তিনি।