সহসাই কেটে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থা

সহসাই কেটে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থা
সহসাই কেটে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থা  © ফাইল ছবি

দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান এবং জনসমাগমে বিধিনিষেধ চলছে। চলমান বিধিনিষেধ আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে শেষ হওয়ার কথা। করোনা সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এরপর নতুন করে আর কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে না বলেই জানা যাচ্ছে। বিধিনিষেধের ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও যে স্থবিরতা রয়েছে ফলে সেটিও কেটে যাচ্ছে।

মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, করোনার মধ্যে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হলেও আগামী সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকেই কেটে যাতে পারে এই সঙ্কট। প্রথমে সশরীরে পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এরপর আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির পর শুরু হতে পারে নিয়মিত ক্লাস। চলমান ছুটি দুই সপ্তাহ বাড়ানো হলেও ২১ ফেব্রুয়ারির পর বিশেষ করে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকেই স্কুল-কলেজে সশরীরে ক্লাস চালু হতে পারে।

আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে কমেছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু

গত ০৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের জানিয়েছেন, চলমান বিধিনিষেধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষাসমূহ অনুষ্ঠিত হবে।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত ২০২০ সালের অনার্স ৪র্থ বর্ষ, একই বছরের ডিগ্রি পাস ও ২০১৮ সালের ডিগ্রি (পুরাতন) পরীক্ষা আজ সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ পরীক্ষা চলবে। নির্ধারিত দিনে সকাল নয়টায় এসব পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।

আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রয়ক অধ্যাপক এসএম গাউসুল আজম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাজিল (স্নাতক) পাস ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষ পরীক্ষা-২০২০ প্রকাশিত সময়সূচী অনুসারে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষাসমূহ পূর্বনির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী শুরু হবে।

আরও পড়ুন: ‘কাউকে শিক্ষাবঞ্চিত করার এখতিয়ার সরকারের নেই’

এছাড়া দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। আর ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা হবে একই মাসের ২২ তারিখে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগামী ১ এপ্রিল এমবিবিএস আর ২২ এপ্রিল বিডিএসের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে পরীক্ষা পেছানো হতে পারে। পরীক্ষা সংক্রান্ত সব কিছু গাইডলাইন আকারে শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।

অন্যদিকে চলমান করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের পরীক্ষা চলমান থাকবে বলে জানানো হয়েছে। সেশনজট ও চাপ কমাতে বন্ধের মাঝেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, চলমান ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষ, মাস্টার্স প্রথম পর্ব ও বিভিন্ন বর্ষের চলমান ব্যবহারিক পরীক্ষাগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। পরিস্থিতি খারাপ না হলে অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষাও পূর্বঘোষিত সম্ভাব্য সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শুধু করোনা

এর আগে করোনা পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি থেকে দুই সপ্তাহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এরপর গত ৩ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় চলমান ছুটি আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এই বিধিনিষেধ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত চালু থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে, চলমান এ বিধিনিষেধ আর বাড়ানো হচ্ছে না বলেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক খুরশীদ আলম। শনিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে অধ্যাপক খুরশীদ আলম জানান, দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সংক্রমণ কমে গেলে সেই বিধিনিষেধ তুলে নিতে আমরা অনুরোধ জানাবো।

তিনি জানান, ‘‘নতুন নির্দেশনা আসার আগ পর্যন্ত আরোপিত বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে। এছাড়া আপাতত নতুন করে কোনো বিধিনিষেধ দেওয়া হবে না।’’


সর্বশেষ সংবাদ