ফরিদপুরে গাছের বিয়ে, খেলেন ৫০০ অতিথি

বিয়ের আয়োজন
বিয়ের আয়োজন  © টিডিসি ফটো

গাছের সাথে গাছের বিয়ে! বিষয়টা শুনতে অবাক লাগেলেও বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে ফরিদপুরে। সদর উপজেলার একটি গ্রামের এক ধরনের ‘বিশ্বাস’ থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মহাধুমধামে জড়াজড়ি করে থাকা দুটি বট ও পাকুড় গাছের ‘বিয়ে’ দিয়েছেন। সেখানে প্রায় ৫০০ মানুষকে খাওয়ানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: তীব্র সেশনজটের হতাশায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর আত্মহত্যা

গতকাল বুধবার উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের দয়ারামপুর বাজারে উৎসবমুখর পরিবেশের লগ্ন মেনে বটগাছ ও পাকুড়গাছের বিয়ে পড়ান পুরোহিত। তার আগে নারী-পুরুষের বিয়ের মত সম্পন্ন হয় সব মাঙ্গলিক কর্ম। বিয়ের আয়োজনে ছিল দয়ারামপুর বাজার কমিটি। এজন্য পুরো বাজারজুড়ে আলোকসজ্জা করা হয়। বাদ্য-বাজনা, গীতের কোনো কমতি ছিল না।

আয়োজকরা জানান, ‘বর’ বটগাছের বাড়ি থেকে বরযাত্রীরা বউ আনতে গিয়েছেন ‘কনে’ পাকুড়গাছের বাড়িতে। বরযাত্রী আর অতিথি ৫০০ জনের পাতে পড়েছে পোলাও, সবজি, বুটের ডাল, ফুলকপির তরকারি, চাটনি ও মিষ্টি।

দয়ারাম বাজার কমিটির সদস্য ও বিয়ের আয়োজক কমিটির সদস্য শংকর মালো বলেন, সনাতন ধর্মমতে বট-পাকুড় গাছের বিয়ে দেওয়া হলে গ্রামবাসীর মঙ্গল হয়। শুধু তাই নয়, পবিত্র গীতাতেও বট-পাকুড়ের বিয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে। পূর্বকাল থেকেই এ ধরনের বিয়ের রীতি প্রচলন হয়ে আসছে। তাই আমাদের শ্মশানের ভেতরে একসঙ্গে বেড়ে ওঠা বট-পাকুড়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিয়েতে ‘কন্যা সম্প্রদান’ করেছেন পাকুড়গাছের ‘বাবা’ অম্বিকাপুর ইউনিয়নের শোভারামপুর গ্রামের ব্যবসায়ী অরুণ সাহা। ‘বর’ বটগাছের বাবা হিসেবে আচারাদি সম্পন্ন করেন শোভারামপুর গ্রামের ব্যবসায়ী অধীর ব্যানার্জি।

স্থানীয়দের বিশ্বাস, বট ও পাকুড়গাছ একসঙ্গে থাকলে বিয়ে দিতে হয়। সেজন্যই একসঙ্গে বেড়ে ওঠা বট-পাকুড়ের বিয়ের আয়োজন। বিয়ে দেখতে দিনভর উৎসুক মানুষ ভিড় করেন বাজারে।

বিয়ের হলুদ কোটা, পুকুর থেকে জল আনা ছাড়াও বর ও কনের বাবাকে দিয়ে করা হয় বিদ্ধি অনুষ্ঠান। নারীরা পুকুরে গিয়ে জল তুলে গঙ্গাপূজা সারেন। জল দিয়ে ভরে আনেন ঘট। ছাদনাতলায় মঙ্গলঘট বসিয়ে শুরু হয় বিয়ের নিবেদন। ‘বর-কনের’ পাশে সাজানো হয় ছাদনাতলা। বিকেল ৫টায় বরের বাড়ি থেকে নারী-পুরুষ আসেন বরযাত্রী হয়ে। গেটে মিষ্টিমুখ করিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় তাদের। শুভতিথি গোধূলিলগ্নে মন্ত্র পড়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন পুরোহিত শ্যামল কুমার দাস।

আরও পড়ুন: ট্রলি ব্যাগে করে গার্লফ্রেন্ডকে হোস্টেলে আনার সময় ধরা খেলেন শিক্ষার্থী

বিয়ে দেখতে আসা আরতি রানী সাহা বলেন, এই ধরনের বিয়ের কথা আমি শুনেছি। কিন্তু কখনোই নিজ চোখে দেখিনি। তাই অনেক আগ্রহ নিয়ে এই বিয়ে দেখতে এসেছি। বট ও পাকুড়ের এই বিয়েতে কোনো মঙ্গল হবে কিনা জানি না, তবে ধর্মমতে দেওয়া এই বিয়েতে আমি থাকতে পেরে অনেক খুশি।

এ প্রসঙ্গে অম্বিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ চৌধুরী বারি বলেন, বিষয়টি আমি পরে জেনেছি। তবে গ্রামের যে কোনো উৎসবকেই আমি স্বাগত জানাই। এই আয়োজন গোটা ইউনিয়নবাসীকে আনন্দিত করেছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence