জনগনকে দেয়া সকল ওয়াদা বাস্তবায়ন করেছি: প্রধানমন্ত্রী

জাতীর উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী
জাতীর উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী  © ফাইল ছবি

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, আমরা যেসব ওয়াদা দিয়েছিলাম, তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। গত ১৩ বছরে আমাদের সরকার আপনাদের জন্য কী কী করেছি, তা আপনারাই মূল্যায়ন করবেন বলেও মন্তব্য তিনি। 

শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ‌্যে দেওয়া এক ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন: ওমিক্রন ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পরামর্শ

ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সরকার হিসেবে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলেই আমি মনে করি। গত ১৩ বছরে আমরা আপনাদের জন্য কী কী করেছি, তা আপনারাই মূল্যায়ন করবেন। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমরা যেসব ওয়াদা দিয়েছিলাম, তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। আমি কয়েকটি বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই।

তিনি বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। ২০০৯ সালে আমাদের সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির কথা আপনাদের মনে আছে। বর্তমানে দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াটে। 

আরও পড়ুন: গবেষণা প্রকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যয় দেখলে লজ্জা লাগে: শিক্ষামন্ত্রী

সরকার প্রধান বলেন, দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পায়রাতে ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। রামপাল, পায়রা, বাঁশখালী, মহেশখালী এবং মাতারবাড়িতে আরও মোট ৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে।

২০০৯ সালে জাতীয় গ্রিডে ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো, বর্তমানে যা ২ হাজার ৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে। গ্যাসের অব্যাহত চাহিদা মেটাতে ২০১৮ থেকে তরল গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমনন্ত্রী খাদ্য স্বয়ং সম্পূর্ণতার কথা উল্লেক করে বলেন, আজ খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ং-সম্পূর্ণ। বর্তমানে দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ বিশ্বে ধান, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে। 

তিনি বক্তব্যে তার গ্রাম উন্নয়নের বিষয় তুলে ধরে বলেন, অতীতের সরকারগুলোর আমলে আমাদের গ্রামগুলো বরাবরই উন্নয়ন ভাবনার বাইরে ছিল। আমরাই প্রথম গ্রামোন্নয়নকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করি। 

আজ দেশের প্রায় সব গ্রামে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত পল্লী এলাকায় ৬৬ হাজার ৭৫৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ৩ লাখ ৯৪ হাজার ব্রিজ-কালভার্ট, ১ হাজার ৭৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, ১ হাজার ২৫টি সাইক্লোন সেন্টার এবং ৩২৬টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে যুগোপযোগী এবং আধুনিক গণপরিবহন হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমানে ১৩ হাজার ৩৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৭টি প্রকল্পের কাজ চলছে। ঢাকার চারদিকে সার্কুলার রেল লাইন স্থাপনের সমীক্ষার কাজ চলছে। 

আরও পড়ুন: ২০ জানুয়ারি বেরোবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন

তিনি বলেন, যমুনা নদীর ওপর ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিমানবহরে ১২টি নতুন অত্যাধুনিক বোয়িং এবং ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়।

সরকার প্রধান বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ এবং গুণগত মানোন্নয়নের ফলে মানুষের গড় আয়ু ২০১৯-২০ বছরে ৭২.৮ বছরে উন্নীত হয়েছে। মাতৃমৃত্যু হার কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি লাখে ১৬৫ জনে।


সর্বশেষ সংবাদ