তিন বছর ধরে চতুর্থ বর্ষে এডওয়ার্ড কলেজের আরাফাত

আরাফাত হোসাইন
আরাফাত হোসাইন  © সংগৃহীত

২০১৯ থেকে শুরু করে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই তিন বছর এক বর্ষে আছেন পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসাইন। এই পরিস্থিতির মধ্যে তিনি একাডেমিক পড়াশোনা শেষ করতে না পারায় চাকরির প্রস্তুতিও নিতে পারছেন না। তবে নিজে পড়াশোনা শেষ করতে না পারলেও স্থানীয় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আইসিটি বিষয়ে শেখাতে শুরু করেছেন। 

আজ শনিবার একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। আরাফাত কলেজটির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। এ কঠিন বাস্তবতায় তিনি নিজেই এখন গ্রামের পিছিয়ে পড়া অবহেলিত শিশুদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন আইসিটি স্কুল ‘ওরাও শিখবে’। তিনি সেখানে বিনা মূল্যে কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিশুদের শেখাচ্ছেন।

আরাফাত জানান, চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে যখন, তখনই হানা দিল সময়ের সবচেয়ে অপ্রিয় শব্দ করোনা। পরীক্ষাগুলো বন্ধ হলো। এরপর দফায় দফায় বাড়ল ছুটি, আর আমাদের হতাশা। ওদিকে ব্যস্তানুপাতিক হারে কমতে থাকে আমাদের মনোবল।

তিনি জানান, ২০১৯ থেকে শুরু করে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই তিন বছরই আছি চতুর্থ বর্ষে, জানি না আর কত দিন থাকতে হবে। এই টানাপোড়েনের মধ্যে ভাঙা মন নিয়ে না হয় একাডেমিক পড়াশোনা, না নিতে পারছি চাকরির প্রস্তুতি। দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ যেমন কম্পিউটার বা যোগাযোগের দক্ষতা, এগুলোও নেওয়া হচ্ছে না।

পড়াশোনা শেষ করতে না পারা আরাফাত এখন শুরু করেছেন অন্যদের শেখাতে। তিনি জানান, এখন আর এসব নিয়ে অতশত ভাবি না। বাড়িতে সময় কাটে টুকটাক গল্প-সাহিত্য পড়ে আর শখের কাজগুলো করে। গ্রামের পিছিয়ে পড়া অবহেলিত শিশুদের নিয়ে গড়ে তুলেছি আইসিটি স্কুল ‘ওরাও শিখবে’।

আরাফাতের কথায়, বিনা মূল্যে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছি কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তির খুঁটিনাটি। অন্য কোনো পেশা বা জীবিকার মাধ্যম বেছে নেওয়া হয়ে ওঠেনি পরিবেশ–পরিস্থিতি আর অর্থের বিবেচনায়। ঘুরেফিরে–ঘুমিয়েই কাটাচ্ছি। ঘুমন্ত স্বপ্নরা একদিন জেগে উঠবে বলে।


সর্বশেষ সংবাদ