এবারে পবিত্র রমজান একটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে পালিত হবে: আইজিপি

  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, এবার আসন্ন পবিত্র রমজান একটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে পালিত হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনা সীমিত রয়েছে। রমজানে ধর্মাচার বিষ‌য়ে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করতে হবে।

আজ বুধবার (২২ এপ্রিল) আসন্ন রমজান উপল‌ক্ষে মাঠ পর্যা‌য়ের কর্মকর্তা‌দের সঙ্গে ভি‌ডিও কনফা‌রে‌ন্সে আইনশৃঙ্খলা ও ক‌রোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে নি‌র্দেশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, পণ্যের পরিবহন স্বাভাবিক রাখতে হবে। বর্তমানে অনেক জেলায় ত্রাণ নিয়ে ট্রাক যাচ্ছে। আসার সময় ওই ট্রাকগুলো খালি ফিরে আসছে। ওই খালি ট্রাকগুলোতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা করতে হবে। ত্রাণ বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। রি‌লিফ, টি‌সি‌বি পণ্য এবং ভি‌জিএফ ও ওএমএস সু‌বিধা যে‌ন জনগ‌ণের কা‌ছে যথাযথভা‌বে পৌঁছায় সেজন্য সং‌শ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করতে হবে।

হাওরে ধান কাটার শ্রমিক পাঠানোর জন্য বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে আইজিপি বলেন, হাওরে হয়তো আরও শ্রমিক পাঠানোর প্রয়োজন হতে পারে। শ্রমিকদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য শ্রমিকবাহী গাড়ির সামনে ব্যানার এবং গাড়িতে শ্রমিকদের তালিকা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নম্বর রাখতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন অসহায় মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অথবা ইফতার বিতরণের না‌মে যেন জনসমাগম না ক‌রেন সে‌টি নি‌শ্চিত কর‌তে হ‌বে। ত‌বে, ত্রাণ বিতর‌ণে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। রমজানে যেন কোনোভাবেই ফুটপাতে ইফতার তৈরি ও বিক্রি না হয় সে ব্যাপারে তৎপর থাকতে হবে।

আইজিপি বলেন, কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অনেকের লকডাউন ভাঙার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রয়োজনীয় চলাচল বন্ধ করতে হবে।

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পু‌লি‌শের অন্য হাসপাতালগু‌লো‌তেও পর্যাপ্ত চি‌কিৎসা ব্যবস্থা রাখা হ‌চ্ছে। এছাড়া, দেশের ৫টি বিভাগে চি‌কিৎসার আ‌য়োজন করা হ‌চ্ছে। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের ঢাকায় যে চিকিৎসা দেওয়া হবে, একই চিকিৎসা বিভাগীয় হাসপাতালেও দেওয়া হবে। তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যেসব পুলিশ সদস্য কোয়ারেন্টিনে, আইসোলেশনে এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তাদের নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ইউনিট প্রধানদের নির্দেশ দেন আইজিপি। তিনি বলেন, শুধু আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের নয়, তাদের পরিবারেরও খোঁজখবর নিতে হবে, যেন তারা নিজেদের একা মনে না করেন।

আইজিপি বলেন, এ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের নিজেদের সুরক্ষিত রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক প্রান্তিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়তে পারে। অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বাড়তে পারে। এ ধরনের অপরাধ দম‌নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ কর‌তে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশ অনেক ভালো কাজ করছে, পুলিশের অনেক অর্জন রয়েছে। এ অর্জন কোনভাবেই ম্লান হতে দেওয়া যাবে না। কেউ যেন ধর্মীয় উসকানি, গুজব এবং করোনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে, সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। জঙ্গিরা যেন কোনোভাবেই কোনো তৎপরতা চালা‌তে না পারে, সে ব্যাপারে তৎপর থাকতে হবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতেও যেসব গার্মেন্টস মালিক শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছেন তাদের প্রতি আইজিপি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। আর যারা এখনো বেতন দিতে পারেননি, শ্রমিকদের বেতন দ্রুত দেওয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ