‘ভুয়া সনদে’ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, অভিযোগ ছাত্রদল নেতার
- চাঁমেক প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৩ AM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৬ AM
ভুয়া সনদ তৈরি করে জালিয়াতির মাধ্যমে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখায় সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরি নেওয়া ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে। রবিবার (১০ আগস্ট) ভুয়া সনদ ও দুর্নীতির লাগাম টেনে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রাক্তন ছাত্র ও স্থানীয় ছাত্রদল নেতা মো. জুম্মান প্রধান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম। রবিবার (১০ আগস্ট) তারা এই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়, চাঁদপুর জেলাধীন মতলব উত্তর উপজেলার স্বনামধন্য ঐতিহ্যবাহী ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার সহকারী শিক্ষক আবুল কাশেম নিয়োগের সময় প্রদানকৃত তার ভোকেশনাল ট্রেডের সনদপত্রটি জালিয়াতি করে তৈরি করা। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় অভিযোগ হিসাবে উপস্থাপিত হলেও তা কোন এক অজানা কারণে যথাযথ ও নিরপেক্ষ বিভাগীয় তদন্ত হয়নি বা মাঝ পথে থেমে গিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত বোর্ড বই হকারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
তিনি বিদ্যালয়ের সম্পদ ফ্যান ও দরজা নিজের পরিবারের ব্যবহারের জন্য নিয়ে গেছে। যা পুরো শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি অশনিবাণী হিসাবে পরিগণ্য। আপনি শুনে আশ্চার্যান্বিত হবেন যে, ভোকেশনাল শাখার সহকারী শিক্ষক আবুল কাশেম প্রতিনিয়ত এমন সব অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছে। যা অজানা কোন কারণে সঠিক ও ন্যায় বিচার হয়নি। আপনি জেনে আরো অবাক হবেন যে, সহকারী শিক্ষক আবুল কাশেম তার কর্মজীবন শুরু করে ভোকেশনাল শাখায়। এবার আপনার মতো একজন বিচক্ষণ ও বিজ্ঞ অফিসারের কর্মকাণ্ড আমাদের এলাকাবাসীর মনে আশার সঞ্চয় করেছে। আশা করি আপনি বিষয়টি যথাযথ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে উক্ত শিক্ষক ও তৎকালীন সময় যারা তাকে চাকুরিতে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দান করেছেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং সহকারী শিক্ষক আবুল কাশেম নিয়োগের সময় যে জালিয়াতি করে ভুয়া সনদপত্র দিয়ে চাকুরি নিয়েছেন তাই তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কেননা তার মতো একজন দুর্নীতিবাজ শিক্ষক স্কুলে থাকলে শিক্ষার্থীরা তার কাছ থেকে ভাল কিছু শিখতে পারবে না।
সেই সাথে আরো উল্লেখ করা হয়, উক্ত ভোকেশনাল শাখার সহকারী শিক্ষক আবুল কাশেম একজন মাদকসেবী ও জুয়াড়ি হিসাবে এলাকায় বেশ সমালোচিত। আবুল কাশেম সুলাতানাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কারণে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বহুদিন স্কুলে অনুপস্থিত ছিল, কিন্তু তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। আরো উল্লেখ্য যে, উক্ত বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী পদে তার নিজের মেয়েকে প্রতারণা, অনিয়ম-দুর্নীতি ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের ঘুষ প্রধানের মাধ্যমে দলীয় প্রভাবে নিয়োগ প্রদান করেন।
তার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ ও তাকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্বনামধন্য বিদ্যালয়টির শিক্ষা পরিবেশ ফিরিয়ে এনে অত্র এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের যথাযথ মানুষ হিসাবে গড়ে উঠার সুযোগ দান করার জন্য বলা হয়।
বাদী মো. জুম্মান প্রধান বলেন, আবুল কাশেম আওয়ামী ফ্যাসিষ্টের একজন দোসর। সে দলীয় প্রভাব দেখিয়ে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরি নিয়েছে। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানই নেই বাংলাদেশে। এবং সে মাদকসেবন করে এবং বিক্রি করে। সুতরাং তার বিরুদ্ধে সকল অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করে তাকে চাকুরি হতে অব্যাহতি না দিলে অচিরেই ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার প্রতিবেশ নস্ট হয়ে যাবে। আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই দ্রুত তাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হউক।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, সহকারী শিক্ষক আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য সরকারি বই বিক্রি করতে গিয়ে জনগণের হাতেনাতে ধরা পড়েন সহকারী শিক্ষক আবুল কাশেম যা নিয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস ইতিপূর্বে সংবাদ প্রকাশ করে।