বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা : মামলার পথে আহত শিক্ষার্থীরা

সংবাদ সম্মেলনে আহত শিক্ষার্থীরা
সংবাদ সম্মেলনে আহত শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

‘আগে যেকোনো প্রতিবাদ করলে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে মামলা-হামলা করা হতো। শিবির ট্যাগ লাগিয়ে হামলা করা হতো। এসবের বিরুদ্ধেই আমরা জুলাই আন্দোলনে গিয়েছিলাম। এখন যদি আন্দোলনে প্ল্যাটফর্ম থেকে এসব করা হয়, তাহলে বিতর্কিত আপনারা হন না। বিতর্কিত হয় সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম এবং সম্মিলিত প্ল্যাটফর্মকে বিতর্কিত করার কোনো অধিকার কোনো ব্যক্তির নেই।'

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জুলাই আন্দোলনের সহসমন্বয়ক ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী তানজীব মোহাম্মদ সোহরাব রেজা।

 এ সময় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে হামলাকারী সমন্বয়কদের বিচার দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহত উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। তারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন শেষে মামলা করার কথা জানান।

রেজা বলেন, ‘আমরা গতকাল সংবাদ সম্মেলন করার পর থেকে নানা প্লেস থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তারা বলছেন আমরা আসতেছি, আমাদের সঙ্গে বসো। বসে এ বিষয়টা সমাধান করার চেষ্টা করো। তারা আমাদের বোঝাচ্ছেন যে হামলাকারীরা প্ল্যাটফর্মের কেউ না।

সিসি টিভিতে প্রমাণ আছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা যেখানে আন্দোলন করেছি, সেখানের সিসি টিভি ফুটেজ আছে। সেটা চেক করলেই তো বেরিয়ে আসে কারা হামলা চালিয়েছে। আমরা তো শার্টার লাগিয়েছি। তাহলে ভেতরে ঢুকে কীভাবে হামলা-ভাঙচুর করি? গতকাল এ নিয়ে কাজ সারতে দেরি হওয়ায় আমরা মামলা করতে পারিনি। আমাদের সব ডকুমেন্ট রেডি করা হয়েছে। আজ আমাদের আহত ভাইরা বলবেন গতকাল কী কী হয়েছিল। এই সংবাদ সম্মেলন শেষ করে আমরা থানায় গিয়ে মামলা করব।

আরও পড়ুন : বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ টাওয়ারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় অফিসে সমন্বয়কদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নারীসহ ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পরে বিকেল ৪টার দিকে সমন্বয়কদের একটি অংশ হামলাকারীদের তাদের অফিসের ভেতরে নিয়ে মারধর করেন।

রাজধানীর ডেমরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মানববন্ধনের সময় দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটেছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এ ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন সমন্বয়ক রিফাত রশিদ।

জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরের যাত্রাবাড়ী থেকে আসা ৩০ থেকে ৩৫ জনের একদল যুবক অফিসের শাটার বন্ধ করে এর সামনে অবস্থান নিয়ে হট্টগোল করেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য নাঈম আবেদীন শাটার বন্ধে বাধা দিলে তার ওপর হামলা করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। পরে ৪টার দিকে সমন্বয়কদের একটি অংশ হামলাকারীদের তাদের অফিসের ভেতরে নিয়ে মারধর করেন। পরে আহতদের কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ঘটনার পরপরই কার্যালয়ে যান সংগঠনটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। এ সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৌরভ রেজা বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছিলাম। সেখানে আমাদের উপর হামলার বিচার চাইতে গিয়েছিলাম। এক পর্যায়ে সেখানে অবস্থানরত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা আমাদের উপর চড়াও হতে থাকে। তারা আমার বোনেদের গায়ে হাত দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এক পর্যায়ে রিফাত রশিদ, আসাদ বিন রনি, জাহিদ আহসানের নেতৃত্বে আমাদের ডেকে নিয়ে গেইট আটকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় আমাদের ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’

তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে সমন্বয়ক রিফাদ রশীদ বলেন, আমরা কারও ওপর হামলা করিনি। যাত্রাবাড়ীর একটা গ্রুপ এসে এখানে ঝামেলা করছে। ছাত্র অধিকার পরিষদের একটা গ্রুপ এই কাজ করেছে।


সর্বশেষ সংবাদ