বড় কর্মসূচি দিল নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা  © টিডিসি ছবি

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের বিষয়ে মানুষের প্রত্যাশা জানতে ৬ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে জনসংযোগ কর্মসূচির ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

এই পাঁচ দিন জুলাই প্রক্লেমেশন বা জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে সারা দেশে লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ, জনসংযোগ করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসনাত বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’তে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই প্রক্লেমেশন ঘোষণার দাবি জানিয়েছি। পরে অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু নিজেই বলেছে তারা জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে। তাই আমরা গত ৩১ ডিসেম্বরের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা থেকে বিরত থেকেছি।

আরও পড়ুন: ৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীদের নিয়ে যা বললেন সারজিস

তিনি বলেন, এই অভ্যুত্থানে যেমন দেশের প্রত্যেক মানুষের অংশগ্রহণ ছিল, আমরা মনে করি এই ঘোষণাপত্রে জনমানুষের আকাঙক্ষার প্রতিফল ঘটবে। আমরা মানুষের কাছে ছুটে যেতে চাই। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, পেশাজীবী মানুষের মাঝে জনসংযোগ চালাব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথভাবে এই কাজটি করবে।

তবে সরকার ঘোষণাপত্র নিয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেয়নি অভিযোগ করে হাসনাত বলেন, অভ্যুত্থানে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। আমাদের আহ্বান থাকবে, এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকার শিগগির কাজ শুরু করবে। আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ফ্যাসিবাদী সরকার সব মানুষের টুঁটি চেপে ধরেছিল। তাই আমরা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে ছুটে যেতে চাই।

জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ছাত্র-জনতার একটি সরকার গঠন হয়েছিল। সরকারেরই এই উদ্যোগ নেওয়ার কথা ছিল। সরকারের বিভিন্ন কাজে আমরা মন্থর গতি দেখতে পাচ্ছি। যখন ২৪ সাল অতিক্রান্ত হচ্ছিল, সেই জায়গা থেকে আমরা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি যে তাদের একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। সে জন্য তাদের উদ্যোগ করা উচিত এবং আমরা জুলাইয়ে যে একটি ঐক্যের জায়গা রয়েছে, সেখানে জনগণকে সমুন্নত রাখার জন্য ওই উদ্যোগ গ্রহণ করি।

তিনি আরও বলেন, তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পক্ষগোষ্ঠীর ও বাংলাদেশের মানুষের সেখানে আসার কথা ছিল, আমার তাদে সেখানেই পাইনি। যখন জাতির এই সংকটকাল যাচ্ছিল এবং শহীদ ও আহতের স্বীকৃতি নিয়ে কোনো ঘোষণা আসছিল না, আমরা সেই সংকট মুহূর্তে আবার সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি।

আরও পড়ুন : সচিবালয়ে আগুন : সন্দেহের ৫ প্রশ্নের যে উত্তর মিলল

রাজনতিক নেতা ও দলগুলোর সঙ্গে যখন বসা শুরু হয়, তাদের পক্ষ থেকে দ্বিতম ছিল, ভিন্নমত ছিল। সে ক্ষেত্রে তাদের পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা বা অসহযোগিতা আছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, প্রোক্লেমেশন বা ঘোষণাপত্র নিয়ে সবার ঐকমত্য রয়েছে। রাষ্ট্রের যতগুলো অংশ রয়েছে এবং দেশের সব পক্ষ ও মানুষের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে দৃষ্টিভঙ্গিগত জায়গা বা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো কীভাবে তুলে আনা যায়, সে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে একটু দেরি হয়েছে।

ঘোষণাপত্র শেষ পর্যায়ে জানিয়ে তিনি বলেন, গত ৫৩ বছর এই রাষ্ট্রকে অকার্যকর বানিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম সব মানুষ ও পক্ষ যাতে অংশ নিয়ে তাদের ভাষাটা প্রকাশ করতে পারে। ৫ তারিখে (আগস্ট) আমরা যে জনতার স্রোত দেখতে পেয়েছিলাম, প্রত্যেক মানুষের কথা যেন এই প্রোক্লেমেশনে থাকে এবং যাদের দীর্ঘকালীন ন্যায্য অধিকার রয়েছে, যা নিয়ে সবাই লড়াই করছেন, প্রতিটা অধিকার যেন থাকে, সেসব বিষয় নিয়ে আমরা সবার সঙ্গে কথা বলেছি।

তবে প্রোক্লেমেশন নিয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই। হয়তো শাব্দিক চয়নে কিছু পার্থক্য রয়েছে। এগুলো অলডি আমরা সলভ করতে পেরেছি। আমরা ড্রাফটিং করে ফেলেছি। যেকেনো সময় আমরা অথবা সরকার যদি ঘোষণা করে, আমরা তা প্রকাশ করব।


সর্বশেষ সংবাদ