ইস! সত্যি যদি মুগ্ধ মারা না যেত

শহীদ মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধ ও তার ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ
শহীদ মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধ ও তার ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ  © ফাইল ফটো

সম্প্রতি আওয়ামী লীগ ও এর ভ্রাতৃপ্রতিম নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জুলাই আন্দোলনে ‘মুগ্ধ নামে কেউ মারা যায়নি’— এমন তথ্য ছড়িয়েছে। এই প্রতিক্রিয়ায় শহীদ মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধের জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেছেন, ‘ইস! যদি সত্যি মুগ্ধ না মারা যেত’। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এমন আকুতি জানান।

‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর প্রধান নির্বাহী হিসেবে বর্তমানে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ দায়িত্ব পালন করছেন। জুলাই আন্দোলনে মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধ শহীদ হওয়ার পর তার ভাই সিগ্ধ মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করে। এরপর আন্দোলনে শহীদ পরিবারদের আর্থিক সহায়তা ও নিরাপত্তা দিতে গঠিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ এর প্রধান নির্বাহী নিযুক্ত হন তিনি।

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পরিচালিত ফ্যাক্ট-চেকিং ফেসবুক পেজ (CA Press Wing Fact-Check) থেকে জানানো হয়েছে, মুগ্ধের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই দাবিটি ভুয়া।

গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে পেজটির এক পোস্টে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই, উত্তরার আজমপুরে বিক্ষোভকারীরা পিপাসার্ত হয়ে পড়লে তিনি তাদের জন্য পানি ও খাবার নিয়ে ছুটে যান। মৃত্যুর ১৫ মিনিট আগে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় তিনি বিক্ষোভকারীদের পানির বোতল ও বিস্কুট বিতরণ করছেন। বিকেল ৫টার দিকে উত্তরার আজমপুর মোড়ে রাস্তার পাশে থাকা অবস্থায় তাকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার কপাল ভেদ করে মাথার ডান পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। তার মরদেহ উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পোস্টে আরও বলা হয়, মুগ্ধর শাহাদাত বরণ ও তার আগের দৃশ্য বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। গত ২৯ জুলাই দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, "মুগ্ধ ২০২৩ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতে স্নাতক শেষ করেন। ঢাকায় ফিরে মার্চ মাসে ভর্তি হয়েছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি)। প্রফেশনাল এমবিএ করছিলেন। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করতেন তিনি।" প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, "১৮ জুলাই উত্তরার আজমপুরে সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান মুগ্ধ। সেদিন তিনি লেমিনেটিং করা বিইউপির আইডি কার্ড (পরিচয়পত্র) গলায় ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। গুলি লাগার পর আইডি কার্ডের ভেতরে রক্ত ঢুকেছিল। রক্ত শুকিয়ে গেছে। মুগ্ধর পরিবারের সদস্যরা রক্তমাখা কার্ডটি সেভাবেই রেখে দিয়েছেন।"

গত ২৭ জুলাই দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার এক সংবাদে বলা হয়, "মুগ্ধ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।" প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, মুগ্ধের জন্ম উত্তরায়, ১৯৯৮ সালে। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও মুগ্ধ ছিল যমজ। এই প্রতিবেদনে আরো নিশ্চিত করা হয়, তার দাফনকার্য সম্পন্ন হয় উত্তরাতেই। তার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির যে কোনো প্রচেষ্টা বিচার থেকে বাঁচতে এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য হত্যাকারীদের পক্ষ থেকে অত্যন্ত একটি জঘন্য পদক্ষেপ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence