স্বৈরাচার হটিয়েছে ছাত্র-জনতা—কোনো দল নয়: জামায়াত আমীর

স্বৈরাচার হটিয়েছে ছাত্র-জনতা—কোনো দল নয়: জামায়াত আমীর
স্বৈরাচার হটিয়েছে ছাত্র-জনতা—কোনো দল নয়: জামায়াত আমীর  © সংগৃহীত

সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের ছাত্র-জনতা স্বৈরাচারকে হটিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, কোনো দল নয় বরং স্বৈরাচারকে হটিয়ে দেশের জনগণ এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে। সেজন্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে বর্তমান সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দিতে জামায়াত প্রস্তুত।

তিনি বলেন, বিগত স্বৈরশাসক সরকার প্রায় সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছি। জামায়াতসহ সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে শেষ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিল। এ অবস্থায় জনগণ বর্তমান সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে। তাদের কাজ বিগত সরকারের ধ্বংস করা প্রতিষ্ঠানগুলো মেরামত করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। আমরা তাদের সে সময় দিতে প্রস্তুত।

চূড়ান্ত বিজয় এখনও আসেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনও চূড়ান্ত বিজয় আসেনি। আমাদের আরও ত্যাগ শিকার করতে হবে। এটাকে চূড়ান্ত বিজয় ভাবার সুযোগ নেই। বাংলার আকাশে এখনও শকুন উড়ছে। এজন্য ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনের দিনগুলো মোকাবিলা করতে হবে।

জামায়াত আমীর বলেন, পতিত স্বৈরাচারের আমলে সবার আগে আঘাত এসেছিল বিডিআরের ওপর। সেই ঘটনা যারা ঘটিয়ে তারা এখনও শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আসেনি। এর মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও বিডিআর দুইটা বাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছিল। এরপর হামলা এসেছে জামায়াতে ইসলামীর উপর। ইসলাম ধর্মের জন্য যারা নির্যাতন সহ্য করে কাজ করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ আনা হলো। তাদের আটকের পর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের নামে বিচারবিভাগীয় হত্যাকাণ্ড চালানো হলো। এরপর সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের উপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যা করা হলো।

তিনি বলেন, সরকার জামায়াত নিষিদ্ধের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার আন্দোলকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। আমরা তাদের পাতা ফাঁদে পা দেইনি। আমরা ধৈর্য্য ধারণ করেছি ও আল্লাহর সহায়তা চেয়েছি। আল্লাহ আমাদের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন। এক মাস আগে যা কল্পনা করিনি। আল্লাহ সেই উপহার আমাদের দিয়েছেন।

ছাত্র-জনতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জামায়াতের শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের উপর চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবো। তারা এ জাতিকে উদ্ধার করেছেন। এবার নিজেদের গড়তে হবে। তোমাদের প্রতি অনুরোধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে হবে। এটা তোমাদের শেষ আত্মত্যাগ নয়, এটা সবে শুরু। জ্ঞান, দক্ষতা অর্জন ও নিজেরা সৎ হতে হবে। একইসঙ্গে অন্যদের সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করতে হবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সংবাদিকরা ওয়াচ টাওয়ারের মতো। তারা উপর থেকে সব দেখেন ও জনগণের ভাষা বুঝেন। এ জন্য তাদের জাতির বিবেক বলা হয়৷ কিন্তু তারা এতদিন মুক্তভাবে কাজ করতে পারেননি। অদৃশ্য নির্দেশে তাদের কলম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনটা যেন আর না হয় সে বিষয়ে সকলে সতর্ক থাকবে হবে। আপনাদের সমাজের দর্পণ বলা হয়। সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আপনারা আমাদের সমালোচনা করবেন। আমাদের ভুল-ভ্রান্তি তুলে ধরবেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, দাবি দাওয়ার নামে যারা বিপ্লবকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করবে, তারা পতিত স্বৈরাচারের দোসর। এই সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে ভোট নিশ্চিত করবে। ভোটের মাধ্যমে জনগণের সরকার ক্ষমতায় আসবে৷ আমরা সেই সরকারের কাছে দাবিদাওয়া পেস করবো। এর আগে আন্দোলনের নামে সড়ক দখল না করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ দিন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence