ঢাকায় চাকরি খুঁজতে এসে গুলিতে পলিটেকনিক ছাত্রের মৃত্যু

বাড্ডা এলাকায় সংঘর্ষ
বাড্ডা এলাকায় সংঘর্ষ  © ফাইল ফটো

২১ বছর বয়সী মারুফ হোসেন। কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষ করে সপ্তাহ তিনেক আগে ঢাকায় এসেছিলেন চাকরি খুঁজতে। গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দুপুরে বাড্ডা এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ চলাকালে মারুফের পিঠে গুলি লাগে। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। খবর সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলার।

নিহত মারুফ হোসেনের মা ময়না খাতুন বলেন, ওরা আমার একমাত্র ছেলেরে গুলি করে মেরে ফেললো! আমার মারুফ আর ফিরে আসবে না।

ছেলের সঙ্গে তার শেষবারের মতো কথা হয়েছিল শুক্রবার সকাল এগারোটার দিকে। ময়না খাতুন বলেন, আমরা ওরে বার বার করে বলে দিলাম যেন গণ্ডগোলের মধ্যে বাইরে বের না হয়। ও বললো: মা, তুমি চিন্তা করো না, আমি রুমেই আছি।

এ ঘটনার প্রায় চার ঘণ্টা পর স্বজনরা জানতে পারেন যে, মারুফ হোসেনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা থেকে মারুফের এক বন্ধু ফোন করে আমাকে বলে যে, আপনারা দ্রুত ঢাকা চলে আসেন। মারুফ আহত হয়েছে, বলেন নিহত মারুফ হোসেনের বাবা মোহাম্মদ শরিফ।

তিনি অবশ্য তখনও জানতেন না যে, তার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মোহাম্মদ শরিফ বলেন, ছেলে আহত হয়েছে শুনে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ঢাকায় এক আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। খোঁজখবর নিয়ে সে পরবর্তীতে আমাদের জানায় যে, গুলি লেগে মারুফ মারা গেছে।

কিন্তু সদ্য ঢাকায় আসা মারুফ হোসেন গুলিবিদ্ধ হলেন কীভাবে? তার বাবা বলেন, ঢাকায় যাদের সঙ্গে আমার ছেলে থাকতো, তারা বলেছে যে, দুপুরে সংঘর্ষ শুরু হলে উৎসুক সবাই গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। কিছুক্ষণের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হলে বাকিদের মতো মারুফও বাসার দিকে দৌড় দেয়। তখনই ওর পিঠে গুলি লাগে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তার বাবা বলছেন যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তার ছেলে দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়ে ছিলো। পরে যে সময় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, ততক্ষণে সে মারা গেছেন। তিনি বলেন, হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার নাকি ওদের বলেছে যে, মারুফ আগেই মারা গেছে।

দুই ভাই-বোনের মধ্যে মারুফ হোসেন ছিলেন বড়। তার বাবা মোহাম্মদ শরিফ পেশায় একজন ফল বিক্রেতা। ছেলেকে লেখাপড়া করাতে গিয়ে তিনি তার আয়ের সবটুকু খরচ করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আয়ের সবটুকু দিয়ে কত কষ্টে ছেলেটারে পড়াশোনা করালাম। কত স্বপ্ন ছিল, ছেলেটা চাকরি করবে, সংসারের হাল ধরবে, আর অভাব থাকবে না। সেই ছেলে আমার চাকরি খুঁজতে যেয়ে গুলিতে মারা গেলো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence