তীব্র দাবদাহে কী করছেন হিট অফিসার

বুশরা আফরিন
বুশরা আফরিন  © ফাইল ছবি

সারাদেশে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা আরও অন্তত তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আজ শুক্রবার এ কথা জানিয়ে তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিন রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক বছর ধরেই ঢাকার তাপমাত্রা বাড়ছে।

নগরবাসীরা বলছেন, তীব্র দাবদাহে নাকাল অবস্থা তাদের। পরিস্থিতি যখন এমন তখন স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, কী করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ‘চিফ হিট অফিসার’ বুশরা আফরিন? গত বছরই বুশরা এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, দায়িত্ব পেয়ে তিনি বসে নেই। চেষ্টা করে যাচ্ছেন কেন ঢাকায় তাপমাত্রা বাড়ছে তা খুঁজে বার করার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেটার চেষ্টা করছেন।

ঢাকায় বাস করেন প্রায় ৪ কোটি ৪২ লাখ মানুষ। তার ওপর গ্রাম থেকে এসে মানুষ প্রতিনিয়তই ঢাকায় ভিড় জমাচ্ছেন। একদিকে বাড়ছে মানুষ অন্যদিকে ঢাকা পরিণত হচ্ছে কংক্রিটের জঙ্গলে। সেইসঙ্গে ঢাকায় কমছে সবুজ। বুশরা বলেন, ‘ঢাকা শহরের প্রায় ৮০ শতাংশ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এর ফলে নানা রকম সমস্যার সঙ্গে বাড়ছে তাপমাত্রাও।’

দিন দিন বাড়তে থাকা জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে সংকটে পড়া ঢাকার তাপমাত্রা গ্রামাঞ্চলের চেয়ে বেশি হচ্ছে। এই সমস্যা সব থেকে বেশি হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন বস্তি অঞ্চলে। বুশরা জানান, এই বস্তিগুলোতে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও খাবার পানির ঘাটতি রয়েছে। সেখানকার ঘরগুলো তৈরি ধাতু বা টিন দিয়ে। গরমে সেগুলো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তার ওপর ওই অঞ্চলে বিদ্যুতের সমস্যাও বেশি।

তিনি বলেন, গরমের কারণে শারীরিক নানা সমস্যা বাড়ছে। শুধু তাই নয়, গরমের কারণে বাড়ছে নানা গার্হস্থ্য সমস্যাও। এরসঙ্গে ঢাকার বাতাসের মান কমে যাওয়ার সঙ্গে নানা রকম দূষণও বাড়ছে।

আজ শুক্রবার মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টাঙ্গাইলে ৪০ ডিগ্রি, যশোরে ৪১ দশমিক ২, রাজশাহী, মোংলা, ঈশ্বরদীতে ৪১ ডিগ্রি ও ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া অন্যান্য স্থানেও রেকর্ড করা হয়েছে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। এমন অবস্থা আরও অন্তত তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।

তীব্র দাবদাহ মোকাবিলায় বুশরা জানান, এই অবস্থা থেকে সবাইকে বাঁচানোর জন্য তারা নিয়মিত ‘হিট অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেন’ চালাচ্ছেন। তার মতে, ঢাকা এবং আশেপাশের এলাকায় তাপমাত্রা কমাতে আরও বেশি গাছ লাগানো জরুরি।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে রাস্তার ধারে ২ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়। শুধু গাছ লাগালেই হবে না, সেগুলোর উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণও করতে হবে। নগরে বনায়ন করা খুব জরুরি। এখানে যে ফাঁকা এবং পরিত্যক্ত জায়গাগুলো আগে সেখানে সবুজায়ন করার দিকেও আমরা নজর দিয়েছি। আমাদের এখানে আরও অনেক পার্ক এবং সবুজে ঘেরা জায়গা দরকার। তাতে তাপমাত্রা যেমন কমবে, তেমনই পাখি সহ নানা প্রাণীও ফিরে আসবে।

ব্যক্তি উদ্যোগেও নগরবাসীকে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন চীপ হিট অফিসার। বুশরা বলেন, তীব্র দাবদাহে আমরা নিজেরা যদি সচেতন থাকি... আমরা যদি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আমাদের ব্যাগে একটা পানির বোতল, টুপি, ফ্যান, ছাতার মতো জিনিসপত্র সাথে রাখি তাহলে কিন্তু অনেকটাই নিরাপত্তা পেতে পারি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence