কর্মকর্তাবিহীন প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, শিক্ষা-কার্যক্রমে স্থবিরতা 

  © সংগৃহীত

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় দীর্ঘদিন যাবত কর্মকর্তাবিহীন প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। ফলে স্থবিরতা বিরাজ করছে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে। দেখা দিচ্ছে নানা জটিলতাও।

জানা যায়, উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পদটি গত জুলাই মাস থেকে শূণ্য। মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল হোসেন কেন্দুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া উপজেলায় ১৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০টি বিদ্যালয়ে পূর্ণ মর্যাদার প্রধান শিক্ষক নেই। রউপজেলা শিক্ষা অফিসে ১৩ টি পদের মধ্যে ৮ টি পদেই খালি। শুধু মাত্র ৩ জন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও দুই জন অফিস সহায়ক নিয়ে জোরাতালি দিয়ে কোনভাবে চালাচ্ছেন অফিস। এতে করে মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদানসহ অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রম।

উপজেলায় পূর্ণ দায়িত্বে কোন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং ৯০ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও চলতি দায়িত্বে থেকে একই সঙ্গে দুই দায়িত্ব পালন করছেন। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদেরও। ফলে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থা পিছিয়ে পড়ছে। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হলে শিগগিরই শিক্ষা কর্মকর্তা এবং প্রধান শিক্ষকের পদ পূরণ করা দরকার বলে মনে করছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, কেন্দুয়া  উপজেলায় তেরোটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ১৮২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদটি গত জুলাই মাস থেকে শূণ্য। ৯০টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য। ৪৭ টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষককে চলতি দায়িত্ব দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাজ চালানো হচ্ছে। ৪৩ টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে।সহকারী শিক্ষা অফিসারের সংকট থাকায় ৭ টি ক্লাষ্টারের কার্যক্রম ও ব্যাহত হচ্ছে।

আরও পড়ুন: এটিও নিয়োগের জটিলতা কাটল, আবেদনের সুযোগ নতুনদেরও

কেন্দুয়া প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জহুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো: জামিরুল হক জানান, গত জুলাই মাস থেকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদটি শূণ্য হয়ে আছে। মোহনগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাঝে মাঝে এসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। 

তিনি আরো বলেন, উপজেলার ৯০ টি প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ শিক্ষা অফিসের ৮ টি পদ শূন্য থাকায় বিদ্যালয়ে পাঠদানসহ অফিসের কার্যক্রম চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শীঘ্রই এসব পদ পূরণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি  ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং ৯০ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাছাড়া অফিসেও ৮টি পদ খালি আছে। এভাবে চললে শিক্ষার গুণগত মান ক্ষুণ্ণ হবে। দ্রুত এ শূন্য পদগুলো পূরণ করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। 

কেন্দুয়া  উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম জানান, গত জুলাই মাস থেকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদটি শূণ্য এবং মোহনগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন কেন্দুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তার পরেও শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে সম্মিলিত নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

স্টাফ সংকটে প্রশাসনিকসহ সকল কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্য্হত হওয়ার কথা স্বীকার করে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, আমি ১ আগষ্ট থেকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কেন্দুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করে আসছি। যেহেতু আমার মূল দায়িত্ব মোহনগঞ্জ উপজেলায় তাই কেন্দুয়া উপজেলায় সম্পূর্ণ দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে শিক্ষা কর্মকর্তাসহ অন্যান্য খালি পদ গুলো পূরণ করা জরুরি। 


সর্বশেষ সংবাদ