নেত্রকোনা

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূতভাবে হাসপাতালের গাছ কাটার অভিযোগ

নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল  © ফাইল ছবি

নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আওতায় থাকা ৫টি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শ্যামল কুমার পালের বিরুদ্ধে। তিনটি মেহগনি ও দুটি রেইনট্রি গাছ কর্তনের ক্ষেত্রে মানা হয়নি সরকারি বিধিমালা। গাছ কাটার বিষয় জানে না খোদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমন ঘটনায় মামলা করারও ঘোষণা দিয়েছিল নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। এই ঘটনায় অবাক হয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন নিজেও। এমন কাজকে অনিয়ম এবং গুরুতর আইনের লঙ্ঘন বলছে সংশ্লিষ্টরা। 

পাঁচটি গাছ কাটার বিষয়ে কোনো সরকারি বিধিমালা মানা হয়নি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গাছ কাটতে হলে অবশ্যই গণপূর্ত বিভাগকে অবগত করে অনুমতি নিয়ে কাটতে হবে। আর সেই প্রক্রিয়া করতে হবে যে প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে থাকবে গাছ। তবে এই ঘটনায় নিজের তত্ত্বাবধানে থাকা গাছ কাটার বিষয়ে অবগতই ছিলেন না নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। গাছ কাটার পর জানতে পারেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমনটা জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও জেলা সিভিল সার্জন। এই ঘটনা জানেন না গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও বনবিভাগ।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন মো. সেলিম মিঞা জানান, গাছ কাটার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাকে অবগত করেছে। কাজটি সঠিক করেননি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ। সরকারি গাছ কাটতে হলে গণপূর্ত বিভাগ কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখতে হয়। গণপূর্ত বিভাগ বন বিভাগের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করে থাকেন। তারা কমিটি গঠন ও মিটিং করে রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে গাছের বিক্রিত মূল্য সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি না মানায় মারাত্মক ভুল করা হয়েছে।

নেত্রকোনা সদর হাসপাতাপালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সাঈদ মো. মাহবুবুর রহমান পাঁচটি গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা গাছ কাটিনি। নেত্রকোনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ গত রবিবার এ কাজ করেছেন। আমি মামলা করার প্রস্তুতির কথা জানালে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ভুল হয়ে গেছে বলে জানান। প্রসিডিউর অনুযায়ী আলাপ আলোচনার মাধ্যমে দেখি কি করা যায়।

নেত্রকোনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসিনুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কোন মিটিং বা রেজ্যুলেশন হয়েছে কিনা সেটাও আমি জানি না।

নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শ্যামল কুমার পালের কার্যালয়ে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা পাঠিয়ে ও ফোন দেওয়া হলেও তার (অধ্যক্ষ) সাড়া মেলেনি। তবে তাঁর প্রশাসনিক কার্যালয়ের প্রধান সহকারি উত্তম কুমার ঘোষ গাছ কাটার কথা স্বীকার করলেও এর পক্ষে অনুমোদনের কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। রান্না ঘরের অসুবিধার জন্য গাছগুলো কাটা হয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আওতাধীন স্টাফ কোয়ার্টারের কয়েকটি ভবনে গত চার বছর যাবৎ অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।


সর্বশেষ সংবাদ