বেসিক ব্যাংক দুর্নীতি: বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

আবদুল হাই বাচ্চু
আবদুল হাই বাচ্চু  © ফাইল ছবি

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ব্যাংকটির আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সংশ্লিষ্ট ৫৯টি মামলায় চার্জশিটে ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলা দায়ের করার প্রায় ৮ বছর পর ৫৯ মামলার চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১২ জুন) দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ব্রিফিংয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব বলেন, ‘কোনও চাপে নয়, স্বাধীনভাবে তদন্ত শেষে আব্দুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারীসহ এজাহারনামীয় এবং তদন্তে আগত আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তারা অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করে অন্যায়ভাবে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যকে লাভবান করে ভুয়া মর্টগেজ, মর্টগেজের অতিমূল্যায়ন এবং মর্টগেজ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বেসিক ব্যাংক লিমিটেড থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাতে ৫৯টি মামলা হয়।

তিনি জানান, এসব মামলা দুদকের পাঁচ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে তারা কমিশনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। যাচাই-বাছাই শেষে কমিশন এসব মামলার চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন জ্ঞাপন করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা হচ্ছেন, দুদকের পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মো. মোনায়েম হোসেন, মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান এবং মোহাম্মদ সিরাজুল হক।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পরপরই অনুসন্ধানে নামে দুদক। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণদানসহ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে।

প্রায় পাঁচ বছর অনুসন্ধান শেষে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে টানা ৫৬টি মামলা হয়। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় দায়ের করা এসব মামলায় আসামি করা হয় ১২০ জনকে। এর মধ্যে ঋণগ্রহীতা ৮২ জন, ব্যাংকার ২৭ ও ভূমি জরিপকারী রয়েছেন ১১ জন।

অনিয়মের মাধ্যমে দুই হাজার ৬৫ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এর মধ্যে রাজধানীর গুলশান শাখা থেকে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখা থেকে ৩৮৭ কোটি টাকা, প্রধান শাখা থেকে প্রায় ২৪৮ কোটি টাকা ও দিলকুশা শাখা থেকে ১৩০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ