ছাত্রের মৃত্যু: আশ্বাসে হাসপাতাল থেকে ক্যাম্পাসে ফিরলেন রাবি ছাত্ররা

রামেক হাসপাতালে অবস্থান নেন রাবি ছাত্ররা
রামেক হাসপাতালে অবস্থান নেন রাবি ছাত্ররা  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ারের মৃত্যু এবং সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাসে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরেছেন শিক্ষার্থীরা। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল প্রশাসনের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা এবং দুজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রয়েছেন। আহ্বায়ক রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ। বুধবার রাত ১টার দিকে হাসপাতালের সামনে এ কথা জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের ডিন ও মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি মো. ফরিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, শাহরিয়ারের মৃত্যুতে সহপাঠীরা মর্মাহত, এটা তাঁরা বুঝতে পারছেন। তবে হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে, সবাই চায় তার সুষ্ঠু বিচার হোক। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে সেটাও তাঁরা দেখবেন। এখানে গ্রাম পর্যায়ের মানুষ থেকে সবাই চিকিৎসা নেন। মরণাপন্ন অনেক রোগী আছে। এখানে এই ঘটনা কেন ঘটল, কীভাবে ঘটল, তাঁর বিচার হবে।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকও বক্তব্য দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফেরেন। তাঁদের ফেরার জন্য বাসের ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূর বলেন, শিক্ষার্থীদের নিয়ে তারা ক্যাম্পাসে ফিরেছেন। পরিবারের সদস্যরা আসছেন। তাদের কাছে শাহরিয়ারের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে চিকিৎসা অবহেলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ারের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মেডিকেল চত্বরে আন্দোলন শুরু করেন তারা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গুরুতর অবস্থায় শাহরিয়ারকে হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরতরা তাদের কাছে উপাচার্য, উপ-উপাচার্যের স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন কাগজপত্র চেয়ে বসে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা শুরু না করে নিয়ম মানতে বাধ্য করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।

তারা বলেন, এর প্রতিবাদ জানালে হাসপাতালের স্টাফদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করে হাসপাতালে স্টাফরা। তারা এখন চিকিৎসারত অবস্থায় রয়েছেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে বলেন।

আরো পড়ুন: রাবি ছাত্রের মৃত্যু: রামেক চত্বরে আন্দোলন

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন সবার মাথা গরম। ছাত্র মারা যাওয়ার ইস্যুটার থেকে কে, কাকে, কেনো মারলো সেটাই বড় ইস্যু হয়ে দাড়িয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা দুপক্ষকেই শান্ত থাকার জন্য বলেছি।

এদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের নিরাপত্তার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে মেডিকেলের কর্তব্যরত ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবি, হাসপাতালে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হবে। এ দাবিতে রাত ১২টার দিকে তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যান।

এর আগে, বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের ওপরতলার রেলিং থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন শাহরিয়ার নামের এক আবাসিক ছাত্র। পরে রাত ৯টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে মেডিকেলে নিয়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ওই হলের ৩৫৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence