হিফজ মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন, গুরুতর অসুস্থ

তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর ৯ বছরের এক ছাত্রকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন
তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর ৯ বছরের এক ছাত্রকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন  © টিডিসি সম্পাদিত

রাজধানীর রূপনগরে তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণীর ৯ বছরের এক ছাত্রকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বড় ভাই কাইফ ইসলাম মিতুল থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। এজহারে অভিযুক্ত হিসেবে মাদ্রাসার কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র ও অজ্ঞাতনামা শিক্ষকদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।  

এর আগে, গত ৪ মার্চ (শুক্রবার) রাতে তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদ্রাসার মিরপুর শাখায় আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে থাকা শিশুটির ওপর এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে ৭ মার্চ ঘটনাটি জানতে পেরে শিশুটির বড় ভাই থানায় মামলা দায়ের করে।

জানা যায়, মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী তার সহপাঠীর কাছে রাখা টাকা জোরপূর্বক নেওয়ার অভিযোগে শিশুটিকে সাত তলা থেকে টেনে-হিঁচড়ে নিচে নামিয়ে আনে। পরে একটি কক্ষে আটকে রেখে প্লাস্টিকের ঝাড়ু ও স্কেল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়।  

নির্যাতনের কারণে শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তার বড় ভাই কাইফ ইসলাম মিতুল। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষকরা ঘটনাটি দেখেও কোনো বাধা দেননি। শিশুটিকে সেহরি খেতেও দেওয়া হয়নি এবং ভোরের নামাজের পর কাউকে কিছু না বলার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।  

শিশুটির বড় ভাই বলেন, পরদিন শনিবার সকালে মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল ও পরিচালক শিশুটিকে ডেকে পাঠান এবং তার শরীরের আঘাত দেখেন। তবে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরিবর্তে ক্লাসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষক তাকে বিস্কুট ও নাপা ট্যাবলেট খাইয়ে দেন এবং কাউকে কিছু না বলার নির্দেশ দেন।  

কাইফ ইসলাম মিতুল জানান, ঘটনার পরদিন সন্ধ্যায় মাদ্রাসা থেকে একটি ফোন নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ভাইকে বাধ্য করা হয় বাড়িতে না যাওয়ার কথা বলতে। এতে সন্দেহ হলে তিনি দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান, যেখানে তার ভাই পুরো ঘটনা খুলে বলে। এরপর চিকিৎসা শেষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে থানায় মামলা করেন তিনি।  

এ ঘটনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের অভিযোগ, মাদ্রাসার শিক্ষকরা ঘটনাটি গোপন রাখতে চাইছিল এবং কোনো সমাধান দেয়নি।  

এ বিষয়ে রূপনগর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. জুয়েল রানা বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তবে তারা সবাই পলাতক থাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের অবস্থান শনাক্ত করা হচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে নির্যাতনের বিষয়টি সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ভুক্তভোগী শিশুর শারীরিক অবস্থা ও মেডিকেল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান তিনি।  

এ ঘটনায় তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদ্রাসার মিরপুর শাখার অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে মুঠোফোন রিসিভ করেন। তবে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর কোনো মন্তব্য না করেই ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার কল করা হলে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence