প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা, ইবতেদায়ীতে কী?

সমাপনী পরীক্ষা
সমাপনী পরীক্ষা  © প্রতীকী ছবি

আবারও বৃত্তি পরীক্ষার বসতে হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বন্ধ থাকায় পৃথক এই পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ২৯ ডিসেম্বর সারা দেশে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু দেশের মাদ্রাসা শিক্ষার ইবতেদায়ী ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখা হয়নি। এতে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে।

এর আগে ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) শুরু হওয়ার পর প্রাথমিকের ৫ম শ্রেণি ও ইবতেদায়ীর ৫ম শ্রেণির আলাদা বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। প্রাথমিক সমাপনীর ফলের ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া শুরু হয়। সর্বশেষ সমাপনী পরীক্ষা হয় ২০১৯ সালে। এরপর করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

গত ২৮ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে মেধাবৃত্তি দেওয়ার বিকল্প মেধা যাচাই পদ্ধতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় বর্তমান প্রচলিত নিয়ম ও পদ্ধতিতেই প্রাথমিক বৃত্তি দেওয়া অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

এক্ষেত্রে, ইবতেদায়ী ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সে ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে কোনোকিছু জানায়নি। সেক্ষেত্রে কোন পদ্ধতিতে ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের মেধা মূল্যায়ন করা হবে, কিংবা ইবতেদায়ী শিক্ষার্থীরা মেধাবৃত্তির আওতায় আসবে কিনা তা নিয়ে ধোয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, মাদ্রাসা পর্যায়ে শুধু স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে প্রায় ২০ হাজার। এছাড়া, দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসাগুলোতে ইবতেদায়ী ৫ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় এক লাখ।

এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর মেধা মূল্যায়নের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজধানী ঢাকার একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সরকার শিক্ষায় সমান সুযোগ ও মাদ্রাসা শিক্ষা আধুনিকায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু শিক্ষায় যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয় সেগুলোতে এই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেনা। মাদ্রাসা শিক্ষা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বরাবরই অবিচারের শিকার। যখন প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার তারিখ, পরীক্ষা পদ্ধতি, সিলেবাসসহ সবকিছুই প্রকাশ করা হলো, তার অনেক পরেও মাদ্রাসাগুলো জানে না তাদের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি কি হবে!

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার এক শিক্ষক জানান, ইবতেদায়ীর শিক্ষার্থীদের বরাবরই বঞ্চিত করা হচ্ছে। উপবৃত্তির, বৃত্তিসহ সব ক্ষেত্রেই তারা উপেক্ষিত। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মাদ্রাসার বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে পরিকল্পনায় আনা হচ্ছে না। এমন মানসিকতা পরিহার করা উচিৎ। তিনি বলেন, আমরা ইবতেদায়ীর বৃত্তির দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কতৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।

এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (দাখিল ও এবতেদায়ী) জান্নাতুন নাহার বলেন, পরীক্ষার বিষয়গুলো মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ঠিক করে থাকে। আপনারা বোর্ডের কাছে প্রশ্ন করতে পারেন।

তবে, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

ইবতেদায়ীর বৃত্তি পরীক্ষার বিষয়ে  মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি ফোন রেখে দেন।

এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে, এম, রুহুল আমীন ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কায়সার আহমেদকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তাদের কেউই ফোন রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence