তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে আপিলের রায় আজ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩০ AM
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে দাখিল করা আপিলের রায় আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ঘোষণা করবেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় প্রদান করবেন। বেঞ্চের অন্যান্য সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরানোর আপিলের শুনানি শেষ হয় এবং রায় ঘোষণার জন্য ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। টানা ১০ দিন শুনানি শেষে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই বহুল আলোচিত মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
আরও পড়ুন: ‘শেখ হাসিনা ইস্যু’ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কতটা প্রভাব ফেলবে?
গত ২১ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরানোর আপিলের শুনানি শুরু হয়। এর আগে গত ২, ৪, ৫, ৬, ১১ নভেম্বর এবং ২২, ২৩, ২৮, ২৯ অক্টোবর টানা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিমউল্লাহসহ তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারীরা আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ পঞ্চদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয় ২০১১ সালের ৩০ জুন এবং পরবর্তীতে ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশিত হয়।
সরকার পরিবর্তনের পর ৫ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন।
একইভাবে ১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। গত বছরের ২৩ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। পরবর্তীতে নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও একই বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানান।
সব আদালতীয় প্রক্রিয়া শেষে আজ ঘোষণা হতে যাচ্ছে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরানো সংক্রান্ত আপিলের বহুল প্রতীক্ষিত ঐতিহাসিক রায়।