প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চাকরি ছেড়ে শিক্ষা ক্যাডারে ২য় মতিয়ার

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চাকরি ছেড়ে শিক্ষা ক্যাডারে ২য় মতিয়ার
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চাকরি ছেড়ে শিক্ষা ক্যাডারে ২য় মতিয়ার  © টিডিসি ফটো

৪০তম বি‌সিএসে শিক্ষা ক্যাডারে (হিসাববিজ্ঞান) ২য় স্থান অর্জন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য-ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মতিয়ার রহমান। তিনি রাজবাড়ী জেলার সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে বাণিজ্য বিভাগ উত্তীর্ণ হন এবং রাজবাড়ি জেলায় ৩য় স্থান অধিকার করেন।

তারপর  ২০১৪ সালে ফরিদপুর মুসলিম মিশন কলেজ থেকে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৫ সালে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য-ব্যবস্থাপনা বিভাগে। তিনি ২০১৮ সালে অনার্স (বিবিএ) এবং একই বিভাগ থেকে ২০১৯ সালে মাস্টার্স (এমবিএ) শেষ করেন। অনার্স পরীক্ষা শেষ করেই তিনি ৪০তম বিসিএসে আবেদন করেন।

সম্প্রতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার বি‌সিএসের সফলতার গল্প শুনিয়েছেন। তার কথাগুলো শুনেছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাগর হোসেন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার সম্পর্কে বলুন, কোথায় আপনি বেড়ে উঠেছেন
ম‌তিয়ার রহমান: আমার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ি জেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের চরশ্যাম নগর গ্রামে। গ্রাম্য এক কৃষক পরিবারে আমার বেড়ে উঠা। বাবা কৃষিকাজ করেন আর মা গৃহিণী। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে আমি তৃতীয়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছাত্র জীবন কিভাবে কেটেছে?
ম‌তিয়ার রহমান: আমার স্কুল জীবন শুরু হয় প্রথমে ব্রাক স্কুলে। এরপর দ্বিতীয় শ্রেনিতে উঠার পর আমাকে স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল 'সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়' এ তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়। সেখানে আমি পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করি। বাসা থেকে ইচ্ছা ছিলো যে বৃত্তি পাওয়ার। কিন্তু আমি ছাত্র খুব ভালো ছিলাম না। অষ্টম শ্রেনীতে খারাপ ফল করার কারণে আমাকে কমার্স নিয়ে পড়ালেখা করতে হয়।

পরবর্তীতে ২০১২ সালে সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ন হই। সেখানে আমি জেলা পর্যায়ে মেধাতালিকায় ৩য় স্থান অধিকার করি এবং ২০১৪ সালে ফরিদপুর মুসলিম মিশন কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে কলেজ জীবন সমাপ্ত করি।’

এরপর ২০১৪ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হই ও ২০১৮ সালে অনার্স (বিবিএ) পরীক্ষা সমাপ্ত করি। আর পরীক্ষা শেষে অনার্স এপিয়ার্ড দিয়েই ৪০তম বিসিএসে আবেদন করি। পরবর্তীতে বিবিএ এবং এমবিএ উভয় পরিক্ষার রেজাল্টে আমি সিজিপিএ ৩.৬৩ অর্জন করি। একাডেমিক রুটিন মেনেই অধিকাংশ সময় পড়ালেখা চালিয়ে যেতাম। পরবর্তীতে সকলের দোয়ায় ইনশাল্লাহ সফলতার সাথেই সকল ধাপ পার করতে পেরেছি।

আরও পড়ুন: বিসিএস ক্যাডারদের সংবর্ধনা দেয়া বুয়েট ভিসির জন্য লজ্জাজনক

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এত পেশার মধ্য থেকে বিসিএসকেই কেন বেছে নিয়েছেন
ম‌তিয়ার রহমান: বিসিএসকে বেছে নেওয়ার কিছু কারণ আছে। যেমন, প্রথমতই বাংলাদেশে সিভিল সার্ভিস সবথেকে সম্মানজনক একটি চাকরি। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার মাধ্যমেই বাংলাদেশে চাকরির নিরাপত্তা, সম্মান,  আত্মমর্যাদা, সমাজে গ্রহণযোগ্যতা, দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ সবকিছুরই প্রাপ্তি ঘটে।

আবার বিসিএসের মাধ্যমেই বাংলাদেশে সবথেকে বেশি পরিমাণ লোকবল সরকারি চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়। আর বিসিএসের প্রস্তুতি নিলে বাংলাদেশের অন্যান্য চাকরির প্রস্তুতিটা প্রায় অনেকটা হয়ে যায়। এ সকল কারণেই বিসিএসকেই একমাত্র টার্গেট করে ছাত্রজীবন (অনার্স) থেকেই একাডেমিক পড়ালেখার পাশাপাশি বিসিএসের পড়ালেখা শুরু করি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এখন পর্যন্ত কোথায় কোথায় চাকরি পেয়েছেন?
ম‌তিয়ার রহমান: আমার প্রথম চাকরি হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা অধিদপ্তরে (এনএসআই)। এরপর দ্বিতীয় চাকরি বাংলাদেশ ব্যাংকে, বর্তমানে এখানেই কর্মরত আছি। আর সম্প্রতি বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে (হিসাববিজ্ঞান) সুপারিশপ্রাপ্ত হলাম। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিসিএসে এমন সাফল্যের পেছনে আপনার অনুপ্রেরণা কি ছিল?
ম‌তিয়ার রহমান: ক্যাডার হওয়ার পেছনে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইয়েরা এবং ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপের পোস্টগুলো অনেক অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। কারণ ফেসবুকে অনেক বড় ভাইয়েরা যখন ৩৬/৩৭/৩৮ বিসিএসে ক্যাডার হয়েছেন। তখন তাদের পোস্টগুলো দেখে নিজের মধ্যে একটা নতুন উদ্যোম কাজ করতো- যে আমিও একদিন এমন বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসে জয়েন করবো। ইনশাল্লাহ আল্লাহ তা’আলা আপনাদের সকলের দোয়া নিজের মনের ইচ্ছা পূরণ করেছে। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নতুনদের উদ্দেশ্য কিছু বলুন
ম‌তিয়ার রহমান: ১. বিসিএস বিগত বছরের প্রিলিমিনারি  ও লিখিত প্রশ্ন সব আগে পড়ে তার উপর একটা স্বচ্ছ ধারনা রেখে সিলেবাস অনুযায়ী সব সাবজেক্টের প্রিপারেশন নেওয়া। 

২.বিসিএস এর কিছু টপিকস আছে যেগুলো প্রিলিমিনারি, লিখিত  ও ভাইবা তিন জায়গায়( বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ) কাজে লাগে সেগুলার জন্য ভালো প্রিপারেশন নেওয়া। 

৩. পড়ালেখার জন্য একটা সুনির্দিষ্ট সময় ও টার্গেট মেনে রুটিন অনুযায়ী সবকিছু সম্পন্ন করা।
৪. প্রতিটা টপিকস সময় থাকলে মৌলিক বইগুলো থেকে ডিটেইলস বুঝে পড়ে তারপর গাইড বই পড়া উচিত। 

৫. আগোছলো ভাবে কোনো প্রিপারেশন না নিয়ে নিজের দুর্বল ও স্ট্রং পয়েন্ট বের করে সে অনুযায়ী সময় দেওয়া উচিত।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময়ের জন্য ধন্যবাদ।
ম‌তিয়ার রহমান: সবার জন্য শুভকামনা। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকেও ধন্যবাদ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence