উত্তর বঙ্গের প্রথম নারী স্নেক রেসকিউয়ার হাবিপ্রবির কনা

হাবিপ্রবি ও উত্তর বঙ্গের প্রথম নারী স্নেক রেসকিউয়ার হাবিপ্রবির ডিভিএম অনুষদের শিক্ষার্থী  কনা
হাবিপ্রবি ও উত্তর বঙ্গের প্রথম নারী স্নেক রেসকিউয়ার হাবিপ্রবির ডিভিএম অনুষদের শিক্ষার্থী  কনা  © টিডিসি ফটো

হাবিপ্রবি ও উত্তর বঙ্গের প্রথম নারী স্নেক রেসকিউয়ার হাবিপ্রবির ডিভিএম অনুষদের শিক্ষার্থী  কনা। বর্তমানে তিনি ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশন হাবিপ্রবি ইউনিটে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২২ সালের ২৯ জুলাই এই ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের সাথে হাবিপ্রবির পথচলা শুরু হয়।

হাবিপ্রবি এবং উত্তর বঙ্গের প্রথম নারী স্নেক রেসকিউয়ার হিসেবে কনার অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রম নিয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাবিপ্রবি প্রতিনিধি রিয়া মোদক। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কবে থেকে সাপ নিয়ে কাজ করছেন?
কনা: ২০১৯ সালে কুকুর ও বিড়াল নিয়ে কাজ করতাম। করোনা মহামারীর সময় গ্রামের বাসায় থাকা অবস্থায় যখন দেখলাম মানুষ সাপ দেখলেই মেরে ফেলে নির্বিচারে। এই যে সাপের প্রতি নির্মম আচরণ, সাপ দেখলেই মেরে ফেলা হয় এই প্রবনতা থেকেই আমার সাপকে বাঁচানোর ইচ্ছা। কারণ আমি মনে করি এটাও একটা প্রাণী, তারও পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কোথা থেকে কী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন?
কনা: হ্যাঁ। ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ কনজার্ভেশন ফাউন্ডেশন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। সেখানে কিছু এক্সাম দেই। হাতেকলমে কিছু ট্রেনিং নেয় তারা। তারপর ভাইভাতে উত্তীর্ণ হলে তারা মাঠে কাজ করতে পাঠায়। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এ পর্যন্ত কতগুলা সাপ রেসকিউ করেছেন?
কনা: এ পর্যন্ত নির্বিষ ও বিষধর সাপ মিলিয়ে প্রায় ৪০ টির মতো সাপ রেসকিউ করেছি। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাদের জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা আসে?
কনা: না। তবে কেউ স্বেচ্ছায় আর্থিক সহায়তা দিলে গ্রহণ করা হয়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সাপকে বাঁচানোই কি মূল লক্ষ্য?
কনা: সাপ বাঁচানোই মূল লক্ষ না। সাপ ধরে ছেড়ে দেওয়া সাময়িক একটা সমাধান মাত্র। তাই সাপে কেটে যেন একটা মানুষও মারা না যায় তা নিশ্চিতকরণ, সর্পভীতি কমানোর লক্ষ্যে কাজ করছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নারী হয়ে এমন চ্যালেঞ্জিং কাজ করেন, পরিবার থেকে কেমন সাপোর্ট পান?
কনা: পরিবার থেকে ফুল সাপোর্ট পাই। তাদের সাপোর্ট ছাড়া এত দূর আসা সম্ভব ছিলো না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নারী রেসকিউয়ার হিসেবে কোনো বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন?
কনা: না। নারী রেসকিউয়ার হিসেবে কোনদিনও কোনো বিপদের সম্মুখীন হইনি। সব জায়গায় সহযোগিতা পাই সকলের কাছ থেকে। সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা দারুন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সাপ রেসকিউ ছাড়া আর কি কি নিয়ে কাজ করেন?
কনা: সাপে কাটা রোগীদের নিয়ে কাজ করি। কিভাবে তারা দ্রুত হাসপাতালে পৈাঁছাতে পারে, কোথায় গেলে এন্টিভেনম পাবে, কিভাবে চিকিৎসা নিতে পারে —এ ধরনের গাইডলাইন দেওয়া হয় আমাদের সংগঠন থেকে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার কাজ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আপনার বার্তা কী?
কনা: সাপ পরিবেশের জন্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সৃষ্টিকর্তা অনর্থক কোন প্রাণী সৃষ্টি করেন নি। আমরা বুঝে না বুঝে অনেক সাপ মেরে ফেলি। কিন্তু সাপের কারণে মানুষের মৃত্যু হয়েছে এমন সংখ্যা খুবই কম। আমাদের সাপ চিনতে হবে, কোনটি বিষধর কোনটি নির্বিষ; তাদের উপকারীতা অপকারীতা জানতে হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: টিম নিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনা কি?
কনা: সাপের সাথে মানুষের সহাবস্থান  নিশ্চিত করা। প্রকৃতির যে সামঞ্জস্যতা আছে তা রক্ষা করা এবং সাপে কেটে যেন একটি মানুষও মারা না যায় সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করা। প্রত্যেকটি জেলা হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনমের ব্যবস্থা রাখা এবং ওঝা থেকে মানুষ যেন আর প্রতারিত না হয় সেই ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করা। প্রত্যেকটি স্কুল-কলেজে  গিয়ে অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম করা যেন সাপের প্রতি মানুষের যে ভীতি আছে সেটা কমে যায়। এই লক্ষ্যে আমরা আমাদের কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence