‘নেক্সট টাইমও তাদের হাত-পা ভেঙে দেবে আমাদের ছেলেরা’

হামলার চিত্র ও ঢাবি প্রক্টর
হামলার চিত্র ও ঢাবি প্রক্টর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর ও তার অনুসারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। আজ রোববার বেলা পৌনে ১টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। ডাকসু ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে নুরের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করা হয়। এছাড়া বাইরে থেকেও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা ইট-পাটকেল ছুঁড়ছেন।

এদিকে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখানে কোন হামলা হয়নি। দু’পক্ষের মারামারি হয়েছে। বহিরাগত ছিল তাদেরকে মারছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য ছিল, বহিরাগতরা অস্ত্র নিয়ে ডাকসুতে অবস্থান নিয়েছে, এমন তথ্যই বিপর্যয়ের মূল কারণ। বহিরাগতদের কার্ডসহ ডকুমেন্ট পেয়েছি। তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা কলেজ এমনকি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও এসেছে; আমরা তাদেরকেও চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছি। যদিও আমাদের কাজ ছিল- তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা, কিন্তু তা করিনি।’

বহিরাগতরা কি ঢাবি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসী, উগ্র; যারা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করতে আসে, তারা শুধু ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধই নয়, নেক্সট টাইম তাদের হাত-পা ভেঙে ফেলা হবে। এভাবেই ভাঙবে ছেলেরা। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তাদের বিরুদ্ধেও সেই ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হবে।’

জানা গেছে, ঘটনার সময় ভিপি নুরের কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সবাই মিলে মারধর করে নুরুর কক্ষ থেকে পাঁচজনকে বের করে দেন। হামলায় আহতদের মধ্যে রয়েছেন- সোহেল, ইমরান, হাসান মামুন, নাজমুল, মামুন, জাহিদ, বিপ্লব, আরিফ, সুমন, আমিনুল প্রমুখ।

হামলায় অংশ নেন যারা
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ঢাবি শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য, ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সাজু, এফ রহমান হল সংসদের জিএস রাহিম খান, এফ রহমান হলের শিক্ষার্থী রাকিব, উচ্ছ্বল (চারুকলা), বিজয় একাত্তরের হল আবু ইউনুস, রবিউল হাসান রানা, সূর্যসেন হলের ভিপি মারিয়াম জামান খান সোহান, জিএস সিয়াম রহমান, ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু হল সংসদের জিএস শান্তসহ শতাধিক নেতাকর্মী।

এদিকে নুরুল হক নুরসহ তার সহপাঠীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে সন্ত্রসীদের প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ এনে প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কেন্দ্র থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডাকসু ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। পরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে বিক্ষোভ শেষ হয়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসে যারাই প্রতিবাদ করে আসছে তাদের ওপর ছাত্রলীগ বারবার আক্রমণ করে আসছে। তাদের আক্রমণের ব্যাপারে প্রক্টরিয়াল বডি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে বারবার জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই প্রশাসনের প্রশ্রয়ে সন্ত্রাসীরা আজকে ক্যাম্পাসকে রক্তাক্ত করার সাহস পেয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ