ওয়ার্ড ও কেবিন সংকট: সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রোগীদের দুর্ভোগ 

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল  © সংগৃহীত

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেড ও কেবিন সংকট, স্ট্রেচার ঘাটতি এবং ল্যাব সেবায় ধীরগতির কারণে ভোগান্তির মুখে পড়ছেন রোগী ও স্বজনরা। ভর্তিপ্রক্রিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধাপে অসংগতি দেখা যাচ্ছে যা নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছেন রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখানে মোট ৫৫টি ওয়ার্ড ও ৭৫টি কেবিন রয়েছে। কিন্তু রোগীর চাপ সামলাতে এই অবকাঠামো অপ্রতুল বলে অভিযোগ রোগীদের।

এক রোগীর স্বজন আনিছ (ছদ্মনাম) অভিযোগ করে বলেন, ‘ভাই, আমি নিজে দেখেছি—ওয়ার্ডে খালি বেড তেমন মেলে না। ভর্তি চিঠি নিয়ে বসে থাকলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। শেষে বাধ্য হয়ে রোগীকে মেঝেতে শুইয়ে দিতে হয়। কেবিন চাইলে বলে আবেদন করতে কিন্তু যাদের জানাশোনা বা দালালের সঙ্গে যোগাযোগ আছে, তারা আগে পায়। এমন হলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?’তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘স্ট্রেচার না পেয়ে আমাকে নিজের হাতে রোগীকে ওয়ার্ডে তুলতে হয়েছে। কেউ ঠিকভাবে বলে না কোথায় যেতে হবে, সবসময় দৌড়াদৌড়ি করতে হয়।’

আরও পড়ুন: ছাত্রশিবিরের সংগীতে মডেলিং, ঢাবি ছাত্রদল নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কার

রোগীর স্বজনদের আরও কয়েকজন বলেন, সরকার বদলালেও হাসপাতালের দুরবস্থা বদলায় না। সব সরকারের আমলেই দেখছি একই অবস্থা—কোনো পরিবর্তন হয় না। সাধারণ মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতাল মানেই ভোগান্তির আরেক নাম। হাসপাতালের সেবার মান বাড়ানো উচিত।

তবে এসব অভিযোগ পুরোপুরি মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, জরুরি অবস্থায় রোগী সরাসরি ইমার্জেন্সি বিভাগে নেওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসক প্রাথমিক মূল্যায়নের পর অবস্থা গুরুতর হলে সরাসরি ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়ে দেন। কেবিন বরাদ্দের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে—বিকেল ও রাতে কেবিন বরাদ্দ দেওয়া হয় না বরং পরদিন দুপুর ১২টার পর কেবিন কমিটির অনুমোদনের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

আর রক্ত পরীক্ষাসংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক প্রয়োজনীয় টেস্ট লিখে দিলে রোগীর স্বজনরা নন-স্টপ সার্ভিস কাউন্টারে টাকা জমা দিয়ে ল্যাবে যান। তবে ফ্রি ব্লাড টেস্ট প্রয়োজন হলে ডায়াগনস্টিক ডিভিশনের অফিসে আবেদন করতে হয় এবং ডিরেক্টর স্যারের স্বাক্ষর নিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়।’

আরও পড়ুন: বয়স নিয়ে বাগ্‌যুদ্ধ চলছেই: ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল সভাপতির বয়স আসলে কত?

হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, ওয়ার্ড বা কেবিনে ভর্তি হতে হলে রোগীকে প্রথমে বহির্বিভাগে চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। সেখান থেকে ভর্তি চিঠি (অ্যাডমিশন স্লিপ) সংগ্রহ করে তা নিয়ে রেজিস্ট্রেশন কাউন্টারে যেতে হয়। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে বেড খালি থাকলে ওয়ার্ডে এবং আবেদনপত্র অনুমোদিত হলে কেবিনে রোগীকে ভর্তি করা হয়। রোগী পরিবহনের জন্য ওয়ার্ডবয় বা হাসপাতালের স্টাফ সহায়তা করেন।

এসব বিষয়ে জানতে হাসপাতালের পরিচালক ডা. শফিউর রহমানের দপ্তরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ