অলস পড়ে আছে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের যন্ত্রপাতি, দেখার কেউ নেই
- আশরাফ আন নূর
- প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ০৯:০৫ PM , আপডেট: ৩১ মে ২০২৫, ০৬:০৮ PM
১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠানটি এখন স্থবির। একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট বন্ধ হয়ে আছে। বন্ধ হয়ে গেছে ভ্যাকসিন ইউনিট, যেখানে আগে রেবিস, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস ও অ্যান্টিসেরা ভ্যাকসিন উৎপাদিত হতো। একইভাবে বন্ধ রয়েছে ইনট্রাভেনাস (IV) ফ্লুইড উৎপাদন ইউনিট, সিএপিডি (CAPD) ফ্লুইড ইউনিট, ব্লাড ব্যাগ উৎপাদন ইউনিট, কোয়ালিটি কন্ট্রোল লাইব্রেরি এবং ওয়ার্কশপ ইউনিট। এসব গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট বন্ধ থাকায় দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্রভাব পড়ছে। যন্ত্রপাতিগুলোর প্রতিটির মূল্য কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে কিছু যন্ত্রের দাম ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকারও ওপরে।
রবিবার (১৮ মে) জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একাধিক ইউনিট সরেজমিনে পরিদর্শন করে যন্ত্রপাতির অলস পড়ে থাকার এমন চিত্র দেখতে পান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিবেদক।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক কর্মকর্তা বলেন, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ছিল এক সময় দেশের স্বাস্থ্য খাতের মেরুদণ্ডস্বরূপ একটি প্রতিষ্ঠান। জনস্বার্থে অত্যাবশ্যক ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সাপোর্টিভ মেডিকেল প্রোডাক্ট উৎপাদনের লক্ষ্যে গড়ে ওঠা এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে সাশ্রয়ী, সহজলভ্য ও গুণগত মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে আসছিল। অথচ আজ সেই ইনস্টিটিউট কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। স্থবিরতা, অবহেলা ও প্রশাসনিক উদাসীনতায় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় তৈরি হয়েছে গভীর শূন্যতা।
তিনি আরও বলেন, এই ইনস্টিটিউটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোর মধ্যে একটি ছিল ভ্যাকসিন ইউনিট। এক সময় এখানেই উৎপাদন হতো রেবিস, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস এবং অ্যান্টিসেরা ভ্যাকসিন—যা দেশের শিশুস্বাস্থ্য, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও দুর্ঘটনাজনিত সংক্রমণ মোকাবেলায় বিরাট ভূমিকা রাখত। কিন্তু সেই ইউনিট এখন বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ ভ্যাকসিন চাহিদা মেটাতে এখন পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে আমদানি কিংবা বেসরকারি খাতের ওপর।
আরও পড়ুন: ঢামেক হাসপাতাল ঘিরে ফুটপাত দখল, দেখার কেউ নেই
প্রতিষ্ঠানসূত্রে জানা যায়, সরকার এখানে শুধু ভ্যাকসিন ইউনিট নয়, একইভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আরও বেশ কয়েকটি অপরিহার্য ইউনিট। এর মধ্যে রয়েছে ইনট্রাভেনাস (IV) ফ্লুইড উৎপাদন ইউনিট, সিএপিডি (CAPD) ফ্লুইড ইউনিট, ব্লাড ব্যাগ উৎপাদন ইউনিট, কোয়ালিটি কন্ট্রোল লাইব্রেরি, এবং ওয়ার্কশপ ইউনিট। এ ইউনিটগুলোতে অসংখ্য যন্ত্রপাতি অলস পড়ে আছে। অথচ একেকটা যন্ত্রপাতির দাম কোটি টাকার উপরে। এই ইউনিটগুলো দেশের সরকারি হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, এমনকি বিভিন্ন মেডিকেল ক্যাম্পে জীবন রক্ষাকারী উপকরণ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।
সূত্র আরও জানায়, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এই অচলাবস্থা শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয় বরং এটি দেশের স্বাস্থ্যখাতের দীর্ঘমেয়াদি অব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনার অভাব ও রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকারের সীমাবদ্ধতার প্রতিচ্ছবি। যেখানে সরকারি উদ্যোগে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার কথা সেখানে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং মূল্যবান যন্ত্রপাতি অলস পড়ে থাকা নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. মমিনুর রহমান বলেন, ‘এখানে অনেক পূর্বেই বিভিন্ন ইউনিট সরকার বন্ধ করে রেখেছে। জনবল সংকটের কারণে অনেক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তবে এ সমস্যার সমাধানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলমান