পেটে বিপাকের ঝুঁকি আছে কিনা, বুঝবেন কীভাবে?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৫ PM , আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৪৪ PM
বিপাক এমন একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া, যার মাধ্যমে শরীর খাবার থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি সঞ্চয় করে। এটি শরীরের শ্বাস-প্রশ্বাস, হজম থেকে শুরু করে কোষ মেরামত ও রক্ত সঞ্চালনসহ সবকিছুকে সচল রাখে। এর হার দ্রুত হলে হজমশক্তি বাড়ে। ফলে শরীরে বাড়তি মেদ জমতে পারে না, ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে।
বিপাকের হার কম হলে, ঝুঁকি বা মেটাবলিক রিস্ক বাড়ে। ফলে উচ্চ রক্ত চাপ বা ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে বিপাকীয় ঝুঁকির বিষয়টি জানতে কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষা ছাড়াই বোঝা সম্ভব। বাড়িতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই নিজের মেটাবলিক রিস্ক কতটা বেশি বা কম সে হিসাব করা সম্ভব। হিসাব করার পদ্ধতিটি শিখিয়েছেন মুম্বইয়ের তারকা পুষ্টিবিদ পূজা মাখিজা।
ঝুঁকি হিসাব করার পদ্ধতিটি শিখিয়েছেন ভারতের মুম্বাইয়ের তারকা পুষ্টিবিদ পূজা মাখিজা। তিনি অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের পুষ্টিবিদ। কাজ করেছেন অভিনেতা রণবীর কপূর, শাহিদ কপূর, সোনম কপূর, বিদ্যা বালনের মতো তারকাদের সঙ্গেও। পূজা জানিয়েছেন, বাড়িতে একটি দড়ির সাহায্যেই নিজের বিপাকীয় ঝুঁকি মেপে নেওয়া যাবে।
যেভাবে মেটাবলিক রিস্ক মাপবেন
-একটি প্রমাণ মাপের দড়ি নিতে হবে, যার দৈর্ঘ্যে ব্যক্তির উচ্চতার চেয়েও বেশি হতে হবে।
-নিজের উচ্চতা মাপতে হবে। ঠিক যতটুকু উচ্চতা হচ্ছে, তা বাদে বাকি অংশটুকু কেটে বাদ দিতে হবে।
-এবার ওই দড়ির মাঝামাঝি অংশ থেকে সমানভাবে ভাঁজ করতে হবে।
-স্বাভাবিক শ্বাস বজায় রেখে, সোজা দাঁড়িয়ে নাভির বিন্দু বরাবর ওই ভাঁজ করা দড়িটি দিয়ে কোমরের মাপ নিতে হবে।
-যদি দেখা যায় মাপে ছোট হচ্ছে অর্থাৎ ভাঁজ করা দড়ি দিয়ে কোমরের পুরোটা মাপা যাচ্ছে না, তবে বুঝতে হবে মেটাবলিক রিস্ক আছে।
-আর যদি মাপে মাপে মিলে যায়, তাহলে বুঝতে হবে ঝুঁকির মাত্রা কম।
-আর যদি দেখা যায় ওই ভাঁজ করা দড়ির চেয়েও কোমরের মাপ কম, তবে মেটাবলিক রিস্ক বা বিপাকীয় ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুন : পেট-মস্তিষ্কের বন্ধুত্ব: সম্পর্ক খারাপ হলেই বিগড়ে যায় মেজাজ
ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের নিজস্ব ওয়েবসাইটে মেটাবলিক রিস্ক মাপতে একটি অঙ্ক কষার কথা বলা হয়েছে। তারা বলছে, মেটাবলিক রিস্ক মাপার সহজ পদ্ধতি হলো, একটি অঙ্ক। যেখানে আপনার কোমরের মাপকে উচ্চতা দিয়ে ভাগ করতে হবে। ভাগ ফল যদি ০.৫০ বা তার কম হয় তবে মেটাবলিক রিস্ক কম। যদি ০.৫১ হয় তবে মেটাবলিক রিস্ক রয়েছে। তার মানে, রয়েছে নানা ধরনের জটিল রোগের ঝুঁকিও।
কারও কোমরের মাপ যদি ৮০ সেন্টিমিটার হয় আর উচ্চতা যদি হয় ১৬০ সেন্টিমিটার তবে ৮০÷১৬০=০.৫০। এক্ষেত্রে মেটাবলিক রিস্ক কম। কিন্তু কারও উচ্চতা যদি ১৬৫ সেমি আর কোমর ৮৫ সেমি বা তার বেশি হয়, তবে অঙ্কের হিসাব দাঁড়াচ্ছে ৮৫÷১৬৫=০.৫২। অর্থাৎ তাঁর শরীরে মেটাবলিক রিস্ক বেশি। অর্থাৎ তাঁকে অবিলম্বে খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে শরীর চর্চা করে চেহারায় সাযুজ্য আনতে হবে। যাতে শরীর সুস্থ এবং রোগমুক্ত থাকে।
এইভাবে মেটাবলিক রিস্ক বোঝা যায় কীভাবে?
পুষ্টিবিদের মতে, অনেকেই সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ মাপার সময় বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই-এ বেশি গুরুত্ব দেন। যেখানে শরীরের ওজন আর উচ্চতার একটি বিশেষ অনুপাত হিসাব করে বার করা হয়। কিন্তু সেটি সঠিক পদ্ধতি নয়। পূজা বলছেন, ওজন এক্ষেত্রে ততটাও গুরুত্বপূর্ণ নয়। জরুরি হলো, শরীরের দৈর্ঘ্য প্রস্থের অনুপাত।
সূত্র : আনন্দবাজার