হতাশা দূর করতে ৫টি অজানা লক্ষণে সতর্ক হওয়া উচিত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০০ PM , আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০০ PM
হতাশা বা মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হলেও অনেক সময় মানুষ নিজের অবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, তার মানসিক শক্তি এতটাই দৃঢ় যে তিনি কখনও হতাশাগ্রস্ত হবেন না। কিন্তু বাস্তবতা হলো—যেকোনো মানুষ, যেকোনো সময় হতাশার শিকার হতে পারেন। আর সময়মতো সর্তক না করালে এই মানসিক অবস্থা ব্যক্তির জীবনে গভীর ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। তবে কিছু লক্ষণ আগে থেকেই চিনতে পারলে সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া সম্ভব।
হতাশার প্রথম লক্ষণ হিসেবে ধরা হয় শারীরিক ব্যথাকে। আন্তর্জাতিক জার্নাল পেন-এ ২০২৪ সালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, হতাশা আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণের তুলনায় অনেক বেশি ব্যথা অনুভব করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা হতাশায় ভুগছেন, তাদের ৫৬ শতাংশই তীব্র ব্যথা ও অস্বস্তি অনুভব করেছেন, যেখানে হতাশামুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এ সংখ্যা মাত্র ১৭ শতাংশ।
এরপর রয়েছে ওজন বৃদ্ধি। মানসিক অবসাদের সঙ্গে দেহের ওজনের পরিবর্তনের সম্পর্ক রয়েছে। অনেক সময় হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তি হঠাৎ করেই অতিরিক্ত খাওয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েন, যার ফলে ওজন বাড়তে শুরু করে। আবার অনেক সময় ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াটাই হতাশার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
আচরণগত পরিবর্তনও হতাশার বড় লক্ষণ। মনের ভেতরে জমে থাকা নেতিবাচক চিন্তা, উদ্বেগ বা অতিরিক্ত চাপ অনেক সময় আচরণে রাগ বা বিরক্তির মাধ্যমে প্রকাশ পায়। হঠাৎ হঠাৎ রেগে যাওয়া, ঘন ঘন মুড সুইং কিংবা অল্পতেই মন খারাপ হয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনতার ইঙ্গিত হতে পারে। এ ধরনের পরিবর্তন হলে নিজের সঙ্গে নিজেই প্রশ্ন করা দরকার—আমি কি ভালো আছি?
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান। অনেকেই দুঃশ্চিন্তা বা ক্লান্তি ভুলতে মাঝে মাঝে অ্যালকোহলের আশ্রয় নেন। কিন্তু অভ্যাস যখন মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তখন সেটি হতাশার দিকেই ইঙ্গিত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা তুলনামূলকভাবে বেশি মদ্যপান করেন।
অতিরিক্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তিও এখন হতাশার একটি প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০২৩ সালে সায়েন্স ডিরেক্ট জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, হতাশায় ভোগা ব্যক্তিরা সমাজমাধ্যমে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি সময় কাটান। অন্যের সাফল্য, আনন্দ বা জীবনযাত্রা দেখে নিজের জীবন নিয়ে হতাশা জন্ম নেয়, যা ধীরে ধীরে অবসাদের দিকে ঠেলে দেয়।
মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো এবং এসব আগাম লক্ষণ চিনে নেওয়া তাই খুবই জরুরি। সময়মতো মানসিক সহায়তা গ্রহণ করলে হতাশা মোকাবিলা সম্ভব।