ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে? জেনে নিন নিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায়
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ০৭:২২ PM , আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৬:৩৮ PM
ওজন কমাতে চাইছেন অথচ ঘন ঘন ক্ষুধা লাগার কারণে ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে? এমন পরিস্থিতি অনেকেরই পরিচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ ক্ষুধা লাগা বা নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি তীব্র আকর্ষণ (ফুড ক্রেভিং) অনেক সময় ওজন বৃদ্ধির নীরব কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ফুড ক্রেভিং স্বাভাবিক বিষয়, কিন্তু যদি তা ঘন ঘন হয় ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি, ঘুম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সহজেই এই সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব।
ফুড ক্রেভিং কী
মাঝে মাঝে কোনো একটা নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ার জন্য তীব্র যে ইচ্ছে হয় এবং সেই খাবারটা না খাওয়া পর্যন্ত মন কিছুতেই শান্ত হতে চায় না। এটাকেই বলা হয় ফুড ক্রেভিং (ঘন ঘন খাবারের ইচ্ছা)। অনেকেরই ঘন ঘন নানা ধরনের খাবারের ক্রেভিং হয়, ফলস্বরূপ দেহের ওজন বাড়তে থাকে। কারণ ক্রেভিংয়ের জন্য গ্রহণ করা খাবার দেহের জন্য প্রয়োজনীয় না তাই সেই খাবার চর্বি আকারে শরীরে জমতে থাকে। তাই এই ক্রেভিং কন্ট্রোলে নিয়ে আসা অনেক বেশি জরুরি।
আরও পড়ুন: রান্নার তেল: স্বাদের বাইরে স্বাস্থ্য ভাবনা
ফুড ক্রেভিং কেন হয়?
দেহ পর্যাপ্ত পরিমাণ সুষম খাদ্য না পেলে ঘনঘন ক্রেভিং হতে পারে। অনেকেই ওজন কমানোর জন্য না খেয়ে থাকেন, তখন খাবারের ক্রেভিং বেড়ে যায়।
হরমোনাল কারণে যেমন পিরিয়ড ও প্রেগনেন্সির সময় ঘন ঘন খাবারের ক্রেভিং হয়। লেপটিন ও সেরোটোনিন হরমোনের জন্য খাবারের ক্রেভিং হয়ে থাকে।
স্ট্রেসে থাকলে খাবারের ক্রেভিং বেড়ে যায় কারণ তখন কর্টিসল হরমোন রিলিজ হয়- যা বারবার ক্ষুধা অনুভব করায়। এছাড়া অনেকের খাবার খেলে স্ট্রেস কমে তাই বারবার খাওয়ার ইচ্ছে হয়।
ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হলে বারবার খাবারের ইচ্ছের প্রবণতা বেড়ে যায়। কারণ তখন শরীরের ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করে না, ইনসুলিন আমাদের শরীরের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
পানি খান: ক্ষুধা লাগলে আগে এক গ্লাস পানি পান করুন
স্ট্রেস কমান: মেডিটেশন ও হালকা ব্যায়াম উপকারী
প্রয়োজনমাফিক খাবার খান: অত্যধিক রেস্ট্রিকশন না করে ব্যালান্স বজায় রাখুন
অবেলায় খিদে পেলে অপেক্ষা করুন: সাধারণত ক্রেভিং ২০-৩০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় না
রাত জাগা বন্ধ করুন: লেইট নাইট স্ন্যাকিং কমাতে ঘুম ঠিক করুন।
ক্ষুধা কমাতে যেসব খাবার রাখবেন ডায়েটে
আপেল: পানিতে ভরপুর এবং পেকটিন ফাইবার সমৃদ্ধ আপেল হজম ধীর করে, পেট ভরায় ও তৃপ্তি দেয়।
ব্লুবেরি: কম ক্যালোরি, বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং নিম্ন গ্লাইসেমিক সূচকের ব্লুবেরি স্থিতিশীল শক্তি দেয় ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়।
আলু (সেদ্ধ): সঠিকভাবে রান্না করা সেদ্ধ আলু ‘স্যাটাইটি ইনডেক্সে’ শীর্ষে। এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং হজমে সহায়ক।
আরও পড়ুন: শিশুরা খাচ্ছে এনার্জি ড্রিংকস, শরীরে জমছে বিষ!
ডিম ও ডাল: প্রোটিন ও আঁশে সমৃদ্ধ এ দুটি খাবার ক্ষুধা দমন করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মধু ও ভিনিগার: মধুতে ঘ্রেলিন হরমোন কমে যায়, ভিনিগার খাবারের চাহিদা কমাতে কার্যকর। সালাদে ভিনিগার ব্যবহার করুন নিয়মিত।
ডার্ক চকলেট:এক কামড় ডার্ক চকলেট অনেকক্ষণের তৃপ্তি দেয় এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।
ভিটামিন সি ও আঁশসমৃদ্ধ খাবার: কমলা, আঙুরের মতো ফল ও সবজিতে থাকা ভিটামিন সি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষুধা কমায়।