তরুণদের মধ্যে ধূমপানের হার বাড়ছে: প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩১ মে ২০২২, ১১:০২ PM , আপডেট: ৩১ মে ২০২২, ১১:০২ PM
দেশের তরুণ নারী ও পুরুষদের মধ্যে ধূমপানের হার বাড়ছে। যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। আজ মঙ্গলবার (৩১ মে) বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ আয়োজিত ‘তামাক: পরিবেশের জন্য হুমকি’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিংয়ের চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাতের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক ও বিজ্ঞান লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশের প্রতিনিধি, মি. বর্ধন জাং রানা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, আমাদের দেশে পুরুষদের চেয়ে নারীরা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য বেশি ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয়, তরুণ নারী ও পুরুষদের মধ্যে ধূমপানের হার বাড়ছে। যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি, বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের মতো পাবলিক প্লেস ও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, বাসাবাড়ি ও রেস্টুরেন্ট; সবখানে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে আমাদের নারী ও শিশুরা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে তামাকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সারা দেশে আমাদের যে কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলো রয়েছে, তাদের মাধ্যমেও আমরা তামাক নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করবো।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা বাস্তবায়নে সম্মিলিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জাতিসংঘ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’য় (এসডিজি) সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে অসংক্রামক রোগজনিত অকালমৃত্যু এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস এবং এফসিটিসি’র বাস্তবায়নকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসডিজির প্রায় প্রতিটি উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব রয়েছে। সরকার ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তামাক নিয়ন্ত্রণকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে।
শিক্ষাবিদ ও জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ধূমপানের মধ্যে কোন ভালো কিছু নেই। এটা খুবই কষ্টদায়ক একটা ব্যাপার। তাই তোমরা কখনও ধূমপান করবে না, অন্য কোন তামাকপণ্যও ব্যবহার করবে না। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আমাকে অনুপ্রাণিত করছে। এর মধ্যে দিয়েই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ করা সম্ভব হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জাং রানা, বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং’ এর এই উদ্যোগের সাধুবাদ জানান। তার মতে, তামাক নির্মূল করার মাধ্যমেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।
এর আগে, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শপথ নিয়েছে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থী শপথের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত এবং সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার থেকে নিজেদের মুক্ত রাখার পাশাপাশি অন্যদেরকেও তামাকজাতপণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করার অঙ্গীকার করে। এর মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশের বাস্তবায়নে একাত্বতা প্রকাশ করে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অতিথিরাও এই শপথ গ্রহণ করেন।