করোনায় ১৫ লাখ শিশু অভিভাবককে হারিয়েছে

  © প্রতীকি ছবি

করোনা মহামারিতে বিশ্বে কমপক্ষে ১৫ লাখ শিশু তাদের ‘প্রাইমারি’ অথবা ‘সেকেন্ডারি’ অভিভাবককে হারিয়েছে। তাদের কেউ পিতামাতাকে হারিয়েছে, দেখাশোনা করতেন এমন দাদাদাদীকে হারিয়েছে অথবা তাদের সঙ্গে বসবাস করতেন এমন অভিভাবকদের হারিয়েছে।

বৃটিশ বিজ্ঞান বিষয়ক ম্যাগাজিন ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। এতে মহামারিতে কিভাবে শিশুরা এতিম হয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে কিভাবে শিশুদের  পরিণতি নির্ধারিত হচ্ছে তা তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে শিশুদের অর্থনৈতিক সাপোর্টও হারিয়ে যাচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সায়েন্স ব্লগ।

গত বছর ১লা মার্চ থেকে এ বছর ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত ২১টি দেশের ওপর এই গবেষণা করা হয়।

এতে যেসব শিশু করোনা ভাইরাসের কারণে একেবারে এতিম হয়ে গেছে, আইনগত অভিভাবক হারিয়েছে অথবা যাদের অভিভাবকত্বে তারা বসবাস করতো তাদেরকে হারিয়েছে, সেসব শিশুকে ধরা হয়েছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ড্রাগ অ্যাবিউজের অর্থায়নে এই গবেষণা করা হয়। এরপর ‘কোভিড-১০-এসোসিয়েটেড ডেথস’ শীর্ষক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। কোভিড-১০ এবং লকডাউনের মতো পরোক্ষ কারণগুলোতে যেসব মৃত্যু ঘটেছে সেগুলো এতে ধরা হয়েছে।

এই গবেষণায় দেখার চেষ্টা করা হয়েছে যে, শিশু বা তরুণদের ওপর কিভাবে মানসিক ক্ষত সৃষ্টি করছে করোনা মহামারি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ড্রাগ অ্যাবিউজের পরিচালক নোরা ডি ভোলকাউ বলেছেন, বিশ্বজুড়ে পরিবারগুলোর ওপর কিভাবে দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি বহন করে আনছে করোনা মহামারি এই গবেষণায় সেক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে শিশুদের ভবিষ্যত মানসিক সুস্থতা ও মঙ্গলের বিষয়টিও নির্ধারণে সহায়ক। অভিভাবককে হারিয়ে একটি শিশু যে মানসিক ক্ষতের শিকার হয়, তা হতে পারে বিপর্যয়কর। এক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করা উচিত। আমাদেরকে এমন হস্তক্ষেপ করে এসব শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন যে করোনা সংক্রান্ত মৃত্যুতে কমপক্ষে ১১ লাখ ৩৪ হাজার শিশু তাদের পিতামাতা বা ‘কাস্টডিয়াল প্যারেন্ট’কে হারিয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ ৪২ হাজার শিশু হয়তো পিতাকে, না হয় মাতাকে, অথবা উভয়কেই হারিয়েছে।

তবে বেশির ভাগই পিতামাতার মধ্যে একজনকে হারিয়েছে। ১৫ লাখ ৬২ হাজার শিশু হয়তো তার পিতামাতার একজনকে, না হয় ‘কাস্টডিয়াল প্যারেন্ট’ অথবা যাদের সঙ্গে তারা থাকেন তাদেরকে হারিয়েছে।  সবচেয়ে বেশি যেসব শিশু তাদের ‘প্রাইমারি’ অভিভাবককে (পিতামাতা অথবা আইনগত অভিভাবক) হারিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, পেরু, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ব্রাজিল ও মেক্সিকো। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, করোনায় মারা যাওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের চেয়ে পুরুষের সংক্যা বেশি। সব মিলে মাকে হারিয়েছে যেসব শিশু তার চেয়ে ৫ গুন বেশি শিশু তার পিতাকে হারিয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ