ভারতে এক সপ্তাহের মধ্যে করোনায় দুই মন্ত্রীর মৃত্যু

তেজস্বী যাদব
তেজস্বী যাদব  © এই সময়

ভারতের বিহারে প্রথম দফায় নির্বাচনের আগে রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় নীতীশ সরকারের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে আক্রমণ করে বসল প্রধান বিরোধী দল আরজেডি। এক সপ্তাহের মধ্যে বিহারের দুই মন্ত্রী মারা গেছেন করোনায়। তার উল্লেখ করে, করোনা-অস্ত্রেই নীতীশ কুমারকে বিঁধল লালু যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল। আগামী ২৮ অক্টোবর প্রথম দফার ভোট রয়েছে বিহারে।

করোনায় আক্রান্ত বিহারের পিছড়ে বর্গ ও অতি পিছড়ে বর্গ কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বিনোদ সিং (৫০) গত সোমবার দিল্লিতে মারা যান। বিনোদ ছিলেন বিজেপির বিধায়ক। উত্তরপূর্ব বিহারের কাটিহার জেলার পরানপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। ওই কেন্দ্রে তিনি ছিলেন তিন বারের বিধায়ক।

গত জুনে প্রথম কোভিড ধরা পড়েছিল নীতীশ মন্ত্রিসভার এই সদস্যের। পরে ১৬ আগস্ট দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রায় একমাস ধরে লড়াই চালিয়ে গত ১২ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে মারা যান বিনোদ সিং।

এদিকে গত শুক্রবার করোনায় মারা গেছেন রাজ্যের আর এক মন্ত্রী কপিল দেও কামাত। বিহারের পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী ছিলেন কপিল। পটনার এইমস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। করোনার কারণে শেষ পর্যন্ত কিডনি কাজ না-করায় তিনি মারা যান বলে এই সময়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

বিহারের বিরোধী মহাজোটের মুখ মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব শনিবার রাজ্যের এই দুই মন্ত্রীর মৃত্যুর উল্লেখ করে, কোভিড নিয়ন্ত্রণে নীতীশ সরকার ব্যর্থতা তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তেজস্বীর অভিযোগ, কোভিড বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার অজ্ঞ। তাই সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে উদ্বেগের লেশ মাত্র নেই।

শুধু নীতীশ নন, বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন লালুপুত্র। ‘বিহারে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডে কিছুই করেননি। রাজ্যের নির্বাচন জেতাই তাঁর একমাত্র ধ্যানজ্ঞান।’ সংবাদ সংস্থাকে তেজস্বী বলেন, ‘বিহারের মানুষ এ সবই দেখছেন। নীতীশ সরকারকে তাঁরা ক্ষমা করবেন না।’

লোক জনশক্তি পার্টির সভাপতি চিরাগ পাসওয়ানের তোপের মুখেও ছিলেন নীতীশ কুমার। তাঁর অভিযোগ, ভোটের প্রচারে কোভিড বিধি মানা হচ্ছে না। সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না-করেই রাজ্যে নির্বাচনী মিছিল-মিটিং হচ্ছে। এর পরেই নীতীশের দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলে চিরাগ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আসলে বিশ্বাস করেন না নীতীশ কুমার। রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি উন্নতি না-হওয়া পর্যন্ত ভোট পিছিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা বলতেই পারতেন নীতীশ। কিন্তু, তিনি সে পথে এগোননি।’

বিহারে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ দুই হাজার ২৯০ জন। রাজ্যের দুই মন্ত্রী-সহ মৃত্যু হয়েছে ৯৮১ জনের। সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৮৮৪ জন।


সর্বশেষ সংবাদ