করোনাভাইরাসের ওষুধ, টিকা কি চলতি বছর বাজারে আসবে?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২০, ০৮:৪১ PM , আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০, ০৮:৪১ PM
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পরিকল্পনা করেছেন, রোগীদের দেহে করোনাভাইরাস না সংক্রমণের প্রথম লক্ষণগুলো দেখা গেলেই তাদের এমন কিছু ওষুধ দেয়া হবে, যা আগে থেকেই প্রচলিত রয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো যে এতে রোগীদের হাসপাতালে পাঠানোর প্রয়োজন কমানো যায় কিনা, বা তার সেরে ওঠার প্রক্রিয়া দ্রুততর হয় কিনা - তা দেখা।
এ গবেষণার প্রথম পর্বে ব্রিটেনের ডাক্তাররা ম্যালেরিয়া-প্রতিরোধী ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন কার্যকর হয় কিনা তা পরীক্ষা করে দেখবেন। অন্য আরেকটি ওষুধের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে - সেটি হলো এ্যাজিথ্রোমাইসিন নামে একটি এ্যান্টিবায়োটিক ।
পরীক্ষার প্রধান অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার বাটলার বলছেন, তারা সহজপ্রাপ্য ওষুধগুলোর কথাই বিবেচনা করছেন– যাতে এর কার্যকারিতা নিশ্চিত হলেই ডাক্তাররা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এগুলো ব্যবহার করা শুরু করতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রে শুক্রবার এক জরিপ রিপোর্টের বরাত দিয়ে খবর বেরোয়, রেমডেসিভির নামে একটি ওষুধ দিয়ে ১১৩ জন করোনাভাইরাস রোগীকে দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।
লন্ডনের দৈনিক দি গার্ডিয়ানে বলা হয়, আমেরিকান ফার্ম জিলেড সায়েন্সেস এই ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধটি তৈরি করেছে এবং তার পরীক্ষায় অংশ নেয় শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হাসপাতাল। এটা দেয়ার পর দেখা যায়, জ্বর-কাশি-শ্বাসকষ্ট ছিল এমন ১২৫ জন রোগীর মধ্যে ১১৩ জন রোগীই এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতাল ত্যাগ করেছে। ওষুধটি দেয়ার পরও মৃত্যু হয় ২ জনের।
জরিপের ফল প্রকাশ করে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত প্রকাশনা স্ট্যাট নিউজ। এর পর ডাউ জোনস, ফুটসি ও স্টক্স সহ ইউরোপ ও আমেরিকার শেয়ারবাজারে দাম প্রায় তিন শতাংশ বেড়ে যায়। তবে স্ট্যাট নিউজের এক ভিডিওতে একজন বিশেষজ্ঞ কাথলিন মুলেন বলেছেন, এ জরিপ থেকে এখনই কোন সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন।
অন্যদিকে টিকা উৎপাদনের পরীক্ষাতেও কিছু অগ্রগতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা এ বছর সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ করোনাভাইরাসের ১০ লক্ষ টিকা তৈরি করবেন।
যুক্তরাজ্যের সরকার এ প্রকল্পকে সমর্থন দিলেও তারা অবশ্য সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, এর কোন গ্যারান্টি নেই এবং টিকা কখন তৈরি হবে তার কোন তারিখ বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া এ টিকায় কতটা কাজ হবে এটা বলার সময়ও এখনো আসেনি। বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞই বলেন, একটি টিকা তৈরি এবং উৎপাদন করতে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে।
তবে আসছে সপ্তাহেই অক্সফোর্ডে করোনাভাইরাসের টিকা প্রথমবারের মতো কিছু রোগীর ওপর পরীক্ষা করা হবে। প্রধান গবেষক অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট বলছেন, তিনি ৮০ ভাগ নিশ্চিত যে এ টিকা কার্যকর হবে।
টিকাটি কতটা কার্যকর হবে তা জানা যাবে কয়েক মাসের মধ্যেই। অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এ্যাড্রিয়ান হিল বলছেন, এই কোভিড ১৯ মহামারি থামাতে সারা পৃথিবীর কোটি কোটি ডোজ টিকা দরকার হবে এবং তা লাগবে এ বছর শেষ হবার আগেই।
পৃথিবীতে এখন বিজ্ঞানীদের প্রায় ৮০টি দল করোনাভাইরাসের টিকা তৈরির জন্য কাজ করছে। এর মধ্যে বড় বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিও আছে। এদের অনেকে মানবদেহের ওপর টিকার পরীক্ষাও শুরু করে দিয়েছে। খবর: বিবিসি বাংলা।