ত্বক উজ্জ্বলে সহায়তা করে যেসব খাবার

ত্বক উজ্জ্বলে সহায়তা করে যেসব খাবার
ত্বক উজ্জ্বলে সহায়তা করে যেসব খাবার   © সংগৃহীত

উজ্জ্বল, চকচকে আর নিখুঁত ত্বক কে না চায়। খাদ্যাভ্যাসের বিষয়ে সচেতন হলে ও সুঅভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে তবেই নিজের আসল সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হবে ভেতর থেকে। সুস্থ ও সুন্দর ত্বক, ডার্ক সার্কেলবিহীন চোখের কোল, প্রাণবন্ত হাসি- ব্যস এতেই চমৎকারভাবে ফুটে ওঠে নিজের আসল সৌন্দর্য।

চারপাশে ধুলাবালুসহ শুষ্ক আবহাওয়া। এর প্রভাব পড়ছে ত্বকের ওপর। ফলে ত্বক হয়ে উঠছে রুক্ষ, খসখসে, প্রাণহীন। এ ছাড়া ত্বকে পড়ছে কালচে ছোপ ছোপ দাগ, ফুসকুড়ি, রোদে পোড়া ভাব এবং মরা কোষ জমে ত্বক হারিয়ে ফেলছে তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য। এজন্য ত্বকে চাই বাড়তি যত্ন। প্রাকৃতিক বা ভেষজ উপাদান দিয়েই এ সময় ত্বক সুন্দর রাখা সম্ভব।

স্বাস্থ্যকর খাবারের মাধ্যমে আপনার ত্বকের পরিবর্তন সহজেই ধরতে পারবেন। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাবার ত্বকে একজিমা, একনের মতো সমস্যাও সৃষ্টি করে। তাহলে কেমন খাবার গ্রহণ করা উচিত? চলুন জেনে আসি

স্বাস্থ্যকর তেল
অলিভ অয়েল, বিশেষত এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল নিয়মিত খেলে ত্বক ভালো থাকে। হ্যাঁ, আপনি ত্বকে আরো কিছু তেল ব্যবহার করতে পারেন। তবে অলিভ অয়েল খেলেও ত্বক সুস্থ থাকে। 

টমেটোOrganic Tomato – Farm Fresh Association
টমেটো, স্ট্রবেরি বা অন্যান্য অনেক ফলে এন্টি-অক্সিডেন্ট খুঁজে পাওয়া যাবে। এন্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ নিরাময়ে সাহায্য করে। ত্বক ভালো রাখার উপাদান ভিটামিন বি যেমন- বি ওয়ান,বি থ্রি, বি পাইভ, বি সিক্স এবং বি নাইন ইত্যাদি টমেটোতে পাওয়া যায়। এই ভিটামিনগুলো ত্বকের বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। 

পানি
নিয়মিত পানি খেলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। পানির মাধ্যমে কোষে পুষ্টি উপাদান প্রবাহিত হয় এবং দেহের দূষিত পদার্থ সহজেই নির্গত হয়। তাছাড়া বেশি বেশি পানি খেলে ঘাম হয় যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। প্রতিদিন অন্তত ২-২.৫/৩ লিটার পানি পান করতে হবে। ত্বকের ভাঁজ দূর করার পাশাপাশি শরীরে চিনি জমতে দেয় না। শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান ঘামের মাধ্যমে বের করে দেয় পানি। পর্যাপ্ত পানি পেলে ত্বকের কোষে পানি পৌঁছায় এবং ত্বক সজীব দেখায়। পরিমিত পানি খেলে ব্রণের উপদ্রবও কমে।

লেবু জাতীয় ফল
লেবু, কমলা, মোসাম্বি, জাম্বুরা, মাল্টা এগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে দারুন কার্যকরী। কারণ এতে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিনস, যা স্কিনকে হাইড্রেটেট রাখে আর ন্যাচারালি স্কিনটোন ব্রাইট করতে হেল্প করে। মেলানিন কমিয়ে স্কিনকে উজ্জ্বল করে তুলতে লেবু জাতীয় ফল বেশ ভালো কাজ করে।

 শসা
ত্বকের যত্নে শসার কথা কল্পনা করলেই চোখে ভাসে   শসার স্লাইস আর মুখে ফেইসপ্যাক তাই না? ফেইসপ্যাকে শসা ব্যবহার করা হয় কেননা এতে আছে কুলিং ইফেক্ট, যা ত্বকে এনে দেয় প্রশান্তি। শুধুমাত্র ফেইসপ্যাকে নয়, রেগুলার শসা খেলে আপনি অনেক উপকার পাবেন। শসাতে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি আর ভিটামিন কে। আর এই উপাদানগুলো আপনার স্কিনকে রাখে হেলদি্ আর গ্লোয়িং। আরও উপকারিতা আছে, বয়সের ছাপ বা বলিরেখা কমাতে ও স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখতে দারুন কার্যকরী এই উপাদানটি।

মাছ
ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা চাইলে প্রতিদিনের খাবারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ রাখা ভালো। এই অ্যাসিড চেহারায় বয়সের গতি ধীর করে এবং প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখে। ওমেগা থ্রি শক্তিশালী প্রদাহরোধী উপাদান সমৃদ্ধ যা ব্রণ দূর করে। তাই ত্বক সুন্দর রাখতে ওমাগা থ্রি সমৃদ্ধ মাছ খাওয়া উপকারী।

ফল
কলা ত্বক ভাল রাখার জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-এ, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। পাশাপাশি এটি ত্বকের মলিনভাব দূর করতেও সাহায্য করে। আপেলে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, এ, সি আর অন্যান্য দরকারি নিউট্রিয়েন্ট। আনইভেন স্কিনটোন রিপেয়ারে, হেলদি গ্লো ধরে রাখতে এবং ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত দেখাতে এই ফলটি দারুন কাজ করে।

টকদই

skin
স্কিনের অনেক ধরনের সমস্যার সল্যুশন দেয় টকদই। ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়, ব্রেকআউটের সমস্যা কমিয়ে স্কিনকে করে উজ্জ্বল ও লাবন্যময়। যেসকল ডেইরি পণ্যে কম চর্বি থাকে তেমন খাবার খাওয়া উচিত। লো ফ্যাট দই খেতে পারলে ভিটামিন এ এর চাহিদা পূরণ হয়। ভিটামিন এ ত্বকের কোষ উৎপাদনে সাহায্য করে। তাছাড়া দইয়ে এসিডোফিলাস নামক এক ধরণের উপাদান পাওয়া যায় যা পরিপাকে সাহায্য করে৷ খাবার সহজে পরিপাক হলে দেহে পুষ্টির সুষম বণ্টন নিশ্চিত হয়। 

গ্রীন টি
শরীরকে ডিটক্স করার জন্য গ্রীন টি নিঃসন্দেহে একটি দারুন উপাদান। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এতে আছে Phytonutrient যেটাকে বলে Epigallocatechin Gallate (EGCG), স্কিনকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে সুরক্ষা দেয়। এছাড়া ডার্ক স্পট কমাতে এবং অকালবার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করে এই উপাদানটি। এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে হেলদি রাখতে ও স্কিনটোন ব্রাইট করতে দারুন কার্যকরী।

গাজর
গাজরে আছে বিটা ক্যারোটিন। স্কিনের আউটার লেয়ারে কোষের বৃদ্ধি করে, হেলদি স্কিন সেলসকে প্রোমোট করে ত্বককে স্মুথ রাখে। গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যেটা ড্যামেজড কোলাজেন রিস্টোর করে। সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এটি সহজলভ্য এবং সহজেই ডায়েটে অ্যাড করা যায়।

বাদাম
স্কিনের জন্যও দারুন উপকারি! বাদাম ভিটামিন ই এর সবচেয়ে ভালো উৎস। এটি ড্যামেজড স্কিন সেলসকে রিপেয়ার করে এবং ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে। স্নেহজাতীয় খাবার ত্বককে সুস্থ্য ও সুন্দর রাখে। এতে থাকা Linoleic acid বা প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড ত্বকের রুক্ষতা ও শুষ্কভাব কমিয়ে ফেলে।

পালং শাক

পালং শাক চাষ - Agrobangla | Agriculture Information and Ecommerce
এমন একটি সবুজ সবজি এটি, যার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এতে আছে lutein এবং zeaxanthin, এগুলো স্কিনের জন্য খুবই বেনিফিসিয়াল। পালং শাকে আরো আছে ভিটামিন এ, ই, কে- যা স্কিনকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো স্কিনের তারুণ্যও বজায় রাখে, সেই সাথে বার্ধক্যের ছাপ পরার প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করে।

কী খাবেন, তার পাশাপাশি কী খাবেন না, সেটা জানাও জরুরি। 
*তেল–মসলায় তৈরি খাবার এবং অতিরিক্ত চিনি সব দিক থেকেই ক্ষতিকর।

*রেস্টুরেন্টের খাবারের প্রতি যাঁদের ঝোঁক আছে, ত্বক সুন্দর রাখতে সেগুলো বাদ দিতে হবে। 

*প্রখর রোদ এড়িয়ে চলুন।

*প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

*খাবারের সময়টা নির্দিষ্ট রাখার চেষ্টা করুন।

*প্রতিদিন খাবারের তালিকায় পর্যাপ্ত পানি ও দুটি করে ফল রাখার চেষ্টা করুন।

*শরীরচর্চা করুন, মন ভালো রাখুন।

এছাড়া ত্বক ভালো রাখার সহজ উপায় অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া। ঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ত্বকের পরিচর্যার মাধ্যমে ব্রণ, কালচেভাব, রোদে পোড়াভাব, বলিরেখা ইত্যাদি কমানো সম্ভব। ত্বকের সমস্যা খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী উপকারী পণ্য ব্যবহার সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence