শাস্তি বাড়িয়ে ‘স্মোকিং জোন’ বাতিল করা হয়েছে © সংগৃহীত
প্রকাশ্যে ধূমপানের শাস্তি এবং এর আওতা বাড়িয়ে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছেন রাষ্ট্রতি। আগের ৩০০ টাকা জরিমানা থেকে এর পরিমাণ বাড়িয়ে এখন সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্ধারিত কয়েকটি স্থানে সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করলে ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। ২০০৫ সালের মূল আইনটি সংশোধন করে জারি করা এই অধ্যাদেশে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নতুন বিধানে পাবলিক প্লেসের সংজ্ঞা ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করা হয়েছে। এখন থেকে কেবল সরকারি অফিস বা হাসপাতাল নয়; বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, শপিংমল, পরিবহন টার্মিনাল, পার্ক ও মেলাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে। এমনকি ভবনের বারান্দা, প্রবেশপথ এবং আশপাশের উন্মুক্ত স্থানেও ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা ‘স্মোকিং জোন’ ব্যবস্থার বিলুপ্তি। আগের আইনে নির্দিষ্ট স্থানে ধূমপানের সুযোগ থাকলেও নতুন সংশোধনীতে তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে কোনো পাবলিক প্লেসেই ধূমপানের জন্য আলাদা কোনো জায়গা রাখা যাবে না। এ ছাড়া তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রেও নতুন নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে। এখন থেকে তামাকের প্যাকেটে ‘স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং’ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।
সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে বর্তমানে যে ৫০ শতাংশ জায়গা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী থাকে, সেটি বাড়িয়ে এখন থেকে ৭৫ শতাংশ এলাকাজুড়ে মুদ্রণ করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রির ক্ষেত্রে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, খেলাধুলার স্থান ও শিশু পার্কের সীমানার ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করবেন না বা করাবেন না। সরকার বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সময় সময় সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দিয়ে এ সীমানার পরিধি বাড়াতে পারবে। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে তিনি সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার মুখে পড়বেন। দ্বিতীয়বার বা বারবার এ অপরাধ করলে দ্বিগুণ হারে শাস্তি পেতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অধ্যাদেশে।