মাইলস্টোন শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি মেনে নিয়েছে সরকার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ০১:১৮ PM , আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৫:০৯ PM
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি সরকার মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ কলেজের ৫ নম্বর ভবনের সামনে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন: বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা প্রকাশ, আহতদের নির্ভুল তালিকা, শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা, ক্ষতিপূরণ প্রদান, ঝুঁকিপূর্ণ বিমান বাতিল এবং বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও অবকাঠামো সংস্কার।
অন্যদিকে, আইন উপদেষ্টা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। তারা উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান দেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতা ও প্লাস্টিক বোতল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিষ্ঠানটির ৫ নং ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।
এর আগে, সকাল ১০টা থেকে কলেজের সামনে জমায়েত হন শত শত শিক্ষার্থী। একদিন আগে তাদের কলেজ ক্যাম্পসে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানি ও আহতের ঘটনায় শোকাহত শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করেন।
বেলা পৌনে ১০টায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় তাকে দেখে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি দেখেও একই স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা ‘উই ওয়ান্ট, জাস্টিস', ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে সরাসরি এসে অবস্থান নেন সড়কের ওপর। পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিকবার সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যে উঠে আসে গভীর যন্ত্রণা ‘আমরা কোনো সহিংসতা চাই না। কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। এত বড় দুর্ঘটনা ঘটলো কেউ দায় নিচ্ছে না। কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা এ অবিচারের বিচার চাই।’
উল্লেখ্য, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি একাডেমিক ভবনে সরাসরি আঘাত হানে বিমানটি, এরপর সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। বিধ্বস্ত ভবনে তখন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। অনেকে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান, অনেককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিমান বিধ্বস্তের পরপরই ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। পরে সেখানে যোগ দেয় সেনাবাহিনী ও বিজিবির দল। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারেও আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ দুর্ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (মঙ্গলবার সকাল ৮টা) নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে এবং আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও অন্তত ৭৮ জন। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।