ডুমুরের ৭টি অবিশ্বাস্য উপকারিতা

ডুমুর
ডুমুর  © টিডিসি ফটো

প্রাচীনকালের মানুষ ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক জিনিসের উপর বেশি আস্থা রাখতো এবং তারা সেসব খেয়ে নিজেদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতো। এমনই একটি প্রাকৃতিক বহু রোগের মহা ওষুধ ডুমুর। মিষ্টি স্বাদের ফলটি শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ নানা রকম পুষ্টি উপাদান। কিডনি রোগের মহা ওষুধ বলা হয় এই ডুমুরকে। প্রতি ১০০ গ্রাম ডুমুরে ৩৭ কিলোক্যালোরি খাদ্যশক্তি, ১২৬ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন এবং ভিটামিন-এ, বি, সি রয়েছে। যা শরীর ভালো রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।

কাঁচা বা শুকনা যেকোনো অবস্থায় এটি খাওয়া যায়। চলুন জেনে নিই ডুমুরের সাতটি অবিশ্বাস্য উপকারিতার।

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে: ডুমুরের ফলের মধ্যে থাকা জৈব উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস, কিডনি রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী। পরিমিত পরিমাণে খেলে কাঁচা ডুমুরে থাকা ফাইবারের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: ডুমুরে থাকা পটাসিয়াম এবং ফ্ল্যাভোনয়েডস উপাদান হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, রক্তচাপ কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়: একজন মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে তার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। ডুমুরে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে শুকনা ডুমুরে থাকে প্রচুর আয়রন ও জিংক, যা ইমিউন সিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে: উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য ডুমুর অত্যন্ত উপকারী। ডুমুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের কোষকে রক্ষা করে এবং বয়সজনিত ছাপ ও রিংকলস কমাতে বড় ধরণের ভূমিকা রাখে। ডুমুরের আরেকটি অসাধারণ গুণ হলো এটা একজিমা ও সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

পুরুষত্ব বৃদ্ধি করে: ডুমুরে থাকা ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং আয়রন পুরুষদের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এই উপাদানগুলো সেক্স হরমোনের সুষম উৎপাদন নিশ্চিত করে এবং পুরুষের যৌন স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। 

মাসিকের অতিরিক্ত রক্তপাত বন্ধ: কিছু কিছু নারীদের মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত দেখা দেয়। ডুমুরে থাকা আয়রন, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি মাসিকের সময় এই অতিরিক্ত রক্তপাত কমাতে সাহায্য করে। ডুমুরের ফল এনিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক, কারণ এটি রক্তের শ্বেত রক্তকণিকার বৃদ্ধি ঘটায় এবং শরীরে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এর ফলে, মাসিকের অতিরিক্ত রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ থাকে। 

ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: ওজন কমানোর বহু উপায় হয়তো অনেকেরই কাজে আসে না, কিন্তু প্রতিদিন মাত্র একটি ডুমুর খে‌লে মেদ ঝরতে পারে। এতে থাকা ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অকারণে খাওয়া কমায়।

এছাড়া প্রাচীন বাংলার মানুষ পেটের পিড়া, ডাইরিয়া জনিত সমস্যা, জন্ডিস, পিত্ত ও আমাশয়, জ্বর, মাথাঘোরা, হেঁচকি ইত্যাদির জন্য এই ডুমুর ফল খেত। দেখতে লটকনের মতো। কাঁচা অবস্থায় এগুলো ভাজি অথবা রান্না করে খাওয়া যায়, পাকলে খুবই সুস্বাদু হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!