ইংলিশ মিডিয়ামে ইসলামী শিক্ষায় অনন্য এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা শিক্ষার্থীরা
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা শিক্ষার্থীরা

সাজানো-গোছানো ও পরিপাটি এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছোট শিশুরা হইহুল্লোড় করে আসছে বারান্দায়। আনন্দঘন পরিবেশে শিখছে, খেলছে আবার ফিরে যাচ্ছে আপনালয়ে। এ শিক্ষা শুধু দেশের গণ্ডিতে সুনাম অর্জন করছে তা নয়, দেশের বাইরে থেকে আসছে তাদের বড় সব স্বীকৃতি। শিক্ষা, আবৃত্তি, বিতর্কচর্চা, খেলাধুলা, ভাষাগত দক্ষতা থেকে শুরু করে প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ সব স্তরেই রয়েছে যাদের বিচরণ। এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল যার নাম। রাজধানীর লালমাটিয়া, মিরপুর এবং উত্তরায় মোট তিনটি স্থানে রয়েছে স্কুলটির শাখা ক্যাম্পাস। 

২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটির অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চলছে মোট ৯টি সুবিশাল ভবনে। ‘প্লে’ থেকে ‘এ’ লেভেল বিভিন্ন শ্রেণিতে প্রায় ৪ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী একদল দক্ষ শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিক্ষা গ্রহণ করছেন। ৪ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর জন্য বর্তমানে স্কুলটিতে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষক এবং ৬ শতাধিক কর্মচারী রয়েছেন। শুধু আধুনিক শিক্ষা নয়, ইংরেজি মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে এক দশক ধরে মানবিক নাগরিক তৈরির কাজ করছে এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।

‘২০১৮ সালে দুবাই থেকে আমাদের এই স্কুলকে বেস্ট প্রি স্কুল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এছাড়া ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং স্কুলের স্বীকৃতিও পেয়েছি আমরা। সার্বিকভাবে আমাদের এই অগ্রগতির পেছনে একটাই লক্ষ্য, যেকোনো মূল্যে শিক্ষার মান নিশ্চিত করা— মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

শিক্ষার্থীদের একজন মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠানটি কেবল অ্যাকাডেমিক শিক্ষা নয়, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষাকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকে। পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের কুরআন মুখস্থ করার জন্য হিফজ প্রোগ্রাম, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য রয়েছে তারবিয়াহ কার্যক্রম। এছাড়াও বাস্তব জীবনে সফলতা অর্জনে প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিশেষ কিছু কোর্স পরিচালনা করা হয় স্কুলটিতে।

যেমন খুশি, তেমন সাজ প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা

ঢাকা শিক্ষাবোর্ড, শিক্ষা অধিদপ্তর, পিয়ারসন এডেক্সেল, কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল কর্তৃক স্বীকৃত স্কুলটি আপন আলোয় উদ্ভাসিত করে চলছে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাঙ্গনকে। স্কুলটি থেকে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের অনেকে পেয়েছেন বিশেষ সম্মাননা। এছাড়া শতভাগ নম্বর পাওয়ার রেকর্ডও আছে একাধিক শিক্ষার্থীর। তবে শুধু শিক্ষাদানেই সীমাবদ্ধ নয়, শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্যও রয়েছে বিশেষ সুবিধা। স্কুলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে লালমটিয়া সোসাইটির খেলার মাঠ।

লালমাটিয়া ছাড়াও রাজধানীর মিরপুর এবং উত্তরায় রয়েছে স্কুলটির আরো দুটি শাখা। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবছর স্কুলটি বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বনভোজনের আয়োজন করে থাকে। স্কুলটিতে পৃথিবী বিখ্যাত ক্যামব্রিজ কারিকুলাম অনুসরণের পাশাপাশি ইসলামী মূল্যবোধের উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়। প্রায় অর্ধশতাধিক সুদক্ষ কুরআনে হাফেজ শিক্ষকদের দিয়ে কোমলমতি শিশুদের আল কুরআন এবং হাদীস অধ্যয়নে রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।

বিশ্বমানের পাঠদানের পাশাপাশি আধুনিক ক্লাসরুম-লাইব্রেরি, মানসম্মত ক্যান্টিন, অভিভাবকদের বসার ঘর থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা থাকায় সন্তুষ্ট স্কুলের অভিভাবকরাও। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি ইসলামি শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের পাঠ্যাভ্যাসের সাথে বাস্তবিক জীবনে ইসলামকে মেনে চলার শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া হয় স্কুলটিতে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা সালাত শিট আছে, যেখানে তারা প্রতিদিনের সালাত আদায় করে শিট পূরণ করার পর সেটি ক্লাস শিক্ষকের কাছে জমা দেয়ার ব্যবস্থা করা আছে।

শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন টপ ইউনিভার্সিটিতে প্রতিনিয়ত পড়তে যান স্কুলটির শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি ইউসিএল, এলএসই, মোনাশ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন, ওয়েস্ট সিডনি ইউনিভার্সিটি, আইআইইউএম মালয়েশিয়া, ইউটিএম মালয়েশিয়াসহ টপ ইউনিভার্সিটিগুলোতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল

শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে বাংলা, ইংরেজি এবং আরবি ভাষায় দক্ষতা অর্জনে দেয়া হয় বিশেষ গুরুত্ব। এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসেও রয়েছে শিক্ষার্থীদের বিশেষ দখল। খেলাধুলা, বিতর্কচর্চা, সঙ্গীতের মতো বিশেষ যোগ্যতায় পারদর্শী শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে এভারোজ আরলিয়ার প্রোগ্রাম, লোয়ার সেকেন্ডারি সেকশন থেকে এ লেভেল পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে স্কুলটিতে।

অ্যাকাডেমিক শিক্ষায় গুরুত্বের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষার্থীরা পাঠক্রম বহির্ভূত কার্যক্রমেও নিয়মিত অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত খেলাধুলা আয়োজনের জন্য স্কুলটির রয়েছে লালমাটিয়া সোসাইটি মাঠ বরাদ্দ। যেখানে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা শরীর চর্চা করতে পারেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের কাণ্ডারি হিসেবে গড়ে তুলতে যাবতীয় সুবিধা নিশ্চিত, মানসম্মত শিক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা অর্জনে গুরুত্ব দেয় কর্তৃপক্ষ। যাতে শিক্ষার্থীরা দেশের উন্নয়নের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারেন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। আগামীতে একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের সেবায় কাজ করতে চান প্রতিষ্ঠানটির এ লেভেল শিক্ষার্থী নাবিলাহ রাইসা। তিনি বলেন, অন্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর সাথে এভারোজের পার্থক্য হল এখানে আমরা সর্বাধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা অর্জন করতে পারি। যেটা বর্তমান সময়ে খুব কম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিশ্চিত করতে পারে। আমার লক্ষ্য একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের সেবায় কাজ করা।

তিনি আরো যোগ করেন, এভারোজ স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমি ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন, তার সবটা শিক্ষকদের কাছ থেকে পেয়েছি। আরেকটি দিক হলো এখানকার প্রায় শিক্ষার্থী কুরআনের একটি নির্দিষ্ট পারা কিংবা সুরাহ মুখস্থ করেন। এটা নিয়মিত পাঠ্যাভ্যাসের সাথে আমাদের শেখানো হয়।

এ লেভেলের অন্য আরেক শিক্ষার্থী মাহদী সারওয়ার জানান, ভবিষ্যতে তিনি একজন পাইলট হতে চান। এই শিক্ষার্থী বলেন, আমি পবিত্র কুরআনের ৫ পারা হিফজ করেছি। আমার সহপাঠীদের অনেকে কেউ ১০ কিংবা ১৫ অথবা পুরো কুরআন মুখস্থ করেছেন। এটা আমাদের নিয়মিত চর্চা। তবে এই স্কুলটির বিশেষত্ব হল, আমি যখন থেকে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি, তখন থেকেই আমার শিক্ষকরা এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দিয়ে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। প্রতিনিয়ত প্রস্তুতি এবং যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাশাপাশি সবসময় তারা আমাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে যাচ্ছেন।

এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, লালমাটিয়া

তিনি আরো বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি আমরা পর্যাপ্ত খেলাধুলা এবং অন্যান্য এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস করতে পারি। প্রতিটি শিক্ষক আমাদের অ্যাকাডেমিক এবং ক্যারিয়ার গাইড লাইন দিয়ে ও সহযোগিতা করেন। অনেক শিক্ষার্থী আগামী দিনে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য যেতে আগ্রহী, তারাও স্কুল থেকে পর্যাপ্ত তথ্য পাচ্ছেন।

স্কুলটির শিক্ষার্থীরা যেন বিশ্বের যেকোনো দেশে পড়ার সুযোগ পান, তারজন্য ভাষাগত দক্ষতা নিশ্চিতে দেয়া হয় বিশেষ গুরুত্ব। ইতোমধ্যে বেশকিছু সাফল্যও অর্জন করেছে স্কুলটি। এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ২০১৮ সালে ‘বেস্ট প্রি-স্কুল অফ দ্য ইয়ার’ পুরস্কার এবং দুবাইয়ে ‘বেস্ট স্কুল চেইন অফ দ্য ইয়ার’ শিরোপা অর্জন করেছে। এমনকি, অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে একমাত্র এভেরোজকে স্বীকৃতি দিয়েছে, যেখানে তাদের শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভর্তির সুযোগ পায়।

স্কুলটির অ্যাকাডেমিক উপদেষ্টা ও গণিতের প্রধান ফারহান আলীম বলেন, শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার উপযোগী করে গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। ব্রিটিশ কারিকুলামের সাথে ইসলামি শিক্ষার সমন্বয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়ে থাকে। যাতে মানসম্মত শিক্ষা অর্জনের সাথে একজন শিক্ষার্থী নৈতিক শিক্ষা অর্জন করতে পারেন৷ 

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের এগিয়ে থাকার জন্য কোর্স বণ্টনে কিছুটা স্বাধীনতা রয়েছ। নির্দিষ্ট কয়েকটি সাবজেক্টের বাইরে একজন শিক্ষার্থী সামর্থ্য অনুযায়ী আরো বেশ কিছু সাবজেক্ট চয়েজ করতে পারেন। সাথে একজন শিক্ষার্থী অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যয়ন করলেও তিনি একইসাথে উচ্চতর গণিত নিয়েও পড়তে পারেন। আবার যে-সব শিক্ষার্থী বাড়তি কোর্স নিতে আগ্রহী তাদের জন্য আমাদের আলাদা গাইডলাইনের ব্যবস্থা থাকে৷ একইসাথে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য ও লেভেলের আগেই ক্যারিয়ার তদারকির সুযোগ থাকে৷

‘দেশের একটা ধনিক শ্রেণি আছে, যারা চান তাদের সন্তানরা ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা গ্রহণ করুক। কিন্তু বাস্তবতার কাছে তারা হার মানতে বাধ্য হন। কারণ, দেশের বেশিরভাগ ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার শিক্ষা প্রদান করা হয় না। আমরা সেই ধারণার পরিবর্তন করার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছিমুফতি কাজী ইব্রাহিম, পরিচালক এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল 

ইংরেজি বিষয়ের প্রধান কামরুল হাসান বলেন, এই স্কুলটির বিশেষত্ব হল, শিক্ষার্থীদের সিলেবাসে এমন কিছু কোর্স এবং কনটেন্ট থাকে, যার মাধ্যমে তারা ভাষাগত দক্ষতা অর্জনে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকে। এই স্কুলের প্রতিটি শিক্ষার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণে কর্তৃপক্ষ একটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এরমধ্যে রয়েছে যুগোপযোগী শিক্ষা, মান নিশ্চিত এবং ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্ব। এই বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

স্কুলের লজিস্টিক্স অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন বিভাগের প্রধান ও সিনিয়র ম্যানেজার সোহেল শাহরিয়ার বলেন, স্কুলটির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ছিল মানসম্মত আধুনিক শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষায় গুরুত্ব দেয়া। একদশকে সেই ভাবনা এখন অনেকটা বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে। তবে সম্প্রতি আমাকে জড়িয়ে বেশ কিছু ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু আমি স্কুল কর্তৃপক্ষের একজন প্রতিনিধি। এটাই আমার পরিচয়। আগামী দিনে স্কুলটি বহুদূর এগিয়ে যাবে সেই প্রত্যাশা রাখি।

তিনি আরো বলেন,  গত ২৮ নভেম্বর স্কুলের একটি প্রসঙ্গে আমাকে জড়িয়ে বলা হয়, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে হুমকি ও এস. এম. রাকিবুজ্জামান নামক একজনকে হত্যার হুমকি দিয়েছি—যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই অভিযোগের পেছনে কোনো প্রমাণ নেই। একজন ছাত্রদলের কর্মী হিসেবে আমি কখনো কাউকে হুমকি প্রদান করিনি।  আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে যাতে আমার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।

স্কুলটির পরিচালক হিসেবে আছেন দেশবরেণ্য আলেম মুফতি কাজি ইব্রাহিম। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ড. জাকির নায়েকের পিস স্কুল বন্ধ হওয়ার পর আমরা এই স্কুলটি চালু করেছি। এখানকার বড় একটা অংশ শিক্ষকরাও পিস স্কুলেরই। অর্থাৎ আগের পিস স্কুল এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটের এভারোজ স্কুলের পরিচয় একই। আমাদের লক্ষ্য, মানসম্মত ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি শিশুদের মনোজগতে ইসলামি বীজ বপন করে দেয়া। যাতে বড় হয়ে তারা ইসলামকে বুঝতে পারেন এবং ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে পারেন।

মুফতি কাজী ইব্রাহিম, পরিচালক এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল 

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশের একটা ধনিক শ্রেণি আছে, যারা চান তাদের সন্তানরা ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা গ্রহণ করুক। কিন্তু বাস্তবতার কাছে তারা হার মানতে বাধ্য হন। কারণ, দেশের বেশিরভাগ ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার শিক্ষা প্রদান করা হয় না। আমরা সেই ধারণার পরিবর্তন করার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি। যার ফলাফল এই স্কুলটি। এখানে শিক্ষার্থীরা বাধ্যতামূলক কুরআন এবং হাদিসের জ্ঞান অর্জন করেন। ফলে ওই শ্রেণির নাগরিকদের জন্য এভারোজ স্কুল একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে আমাদের ও লেভেল এবং এ লেভেল পর্যন্ত রয়েছে। আগামীতে আমরা এভারোজ ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।

স্কুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ বলেন, ২০১৮ সালে দুবাই থেকে আমাদের এই স্কুলকে বেস্ট প্রি স্কুল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এছাড়া ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং স্কুলের স্বীকৃতিও পেয়েছি আমরা। সার্বিকভাবে আমাদের এই অগ্রগতির পেছনে একটাই লক্ষ্য, যেকোনো মূল্যে শিক্ষার মান নিশ্চিত করা। কারণ, মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করতে ব্যর্থ হলে আমাদের স্কোরিং কমবে। সেটার প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থী ভর্তিতে।

আনিসুর রহমান সোহাগ, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

সম্প্রতি এই স্কুলের মালিকানা সংশ্লিষ্ট বেশকিছু সমালোচনা উঠে আসে গণমাধ্যমে। এস বিষয় নিয়ে আনিসুর রহমান বলেন, আমরা ২০১৫ সালে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পরে তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের এই উদ্যোগকে মেনে নিতে পারেনি। দীর্ঘদিন থেকে আমরা নানা প্রকার বৈষম্যের শিকার হয়ে এখান পর্যন্ত এসেছি। অনেকে সমালোচনা তৈরির চেষ্টা করছেন। আমাদের মধ্যে বিষয়গুলো সমাধান হয়েছে। একজন কর্মচারীকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। সেটারও সমাধান হয়েছে। আগেও তৎকালীন সময়ে ফ্যাসিবাদী সরকার আমাকে ডিজিটাল আইনে মামলা দিয়ে বহু হয়রানিও করেছে। কিন্তু আমরা দমে যাইনি। মানসম্মত ইংরেজি শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি আমরা ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে স্কুলটির পরিচালনা করছি।


সর্বশেষ সংবাদ